নিজস্ব প্রতিবেদক: লোকসান করেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে পাঁচটি কোম্পানি লভ্যাংশ হিসেবে নগদ টাকা ও দু’টি কোম্পানি বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর ঘোষিত লভ্যাংশের তথ্য পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কোম্পানিগুলো পরিচালনা পর্ষদ সভা করে ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য এ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া কোম্পানিগুলো আগের বছরগুলোর যে মুনাফা রিজার্ভে জমা রেখেছিল, সেখান থেকে এবার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশের টাকা দেবে।
নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা পাঁচ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- জিকিউ বলপেন, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার, এটলাস বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল টিউবস। আর লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া দুই কোম্পানি হল- ন্যাশনাল টিউবস এবং মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস।
জিকিউ বলপেন
শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ২৭ পয়সা লোকসান করা কোম্পানিটি এবার শেয়ারহোল্ডারদের নগদ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগের হিসাব বছরেও শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা ১২ পয়সা লোকসান করে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। রিজার্ভ ভেঙে লভ্যাংশ দেয়ার পরও ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির বর্তমান রিজার্ভে রয়েছে ১১২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এটলাস বাংলাদেশ
শেয়ারপ্রতি ৯৯ পয়সা লোকসান করা সরকারি মালিকানাধীন এ কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের নগদ ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। গত বছর শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ২৩ পয়সা লোকসান করে এ প্রতিষ্ঠানটি ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল। রিজার্ভ ভেঙে লভ্যাংশ দেয়ার পরও ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির রিজার্ভে বর্তমানে ৩৯৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা রয়েছে।
ইস্টার্ন কেবলস
শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা ৭২ পয়সা লোকসান করা সরকারি মালিকানাধীন এ কোম্পানি শেয়ারহোল্ডাদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। গত বছর শেয়ারপ্রতি ১৫ পয়সা লোকসান করে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডাদের ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল। টানা দুই বছর লোকসান করার পরও ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটিতে বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ৪৯ কোটি ১২ লাখ টাকা।
হাক্কানি পাল্প
শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১১ পয়সা লোকসান করা কোম্পানিটি এবার শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর শেয়ারপ্রতি ৯৬ পয়সা লোকসান করে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। রিজার্ভ ভেঙে লভ্যাংশ দেয়ার পরও ১৯ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির রিজার্ভে বর্তমানে ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রয়েছে।
খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং
শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৩৪ পয়সা লোকসান করা কোম্পানিটি এবার শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। এর মাধ্যমে পচা কোম্পানি বা ‘জেড’ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসবে প্রতিষ্ঠানটি। উৎপাদন বন্ধ থাকায় আগের দুই বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোন ধরনের লভ্যাংশ না দিয়ে কোম্পানিটি জেড গ্রুপে স্থান করে নেয়। ৭৩ কোটি ৪ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির বর্তমানে রিজার্ভে আছে ৩৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
ন্যাশনাল টিউবস
শেয়ারপ্রতি ১৬ পয়সা লোকসান করা সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৫ পয়সা লোকসান করে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডাদের ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল। বছরের পর বছর লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দিলেও ৩১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ৫২৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং
শেয়ারপ্রতি ৯৩ পয়সা লোকসান করা কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডাদের ২ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি ৫১ পয়সা মুনাফা করে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল। শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে নগদ টাকা না দিলেও ৯৯ কোটি ১ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির রিজার্ভে বর্তমানে ৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা রয়েছে।