ধর্ম ডেস্ক: ইসলাম শান্তি ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। মানুষকে সঠিক জীবনের দিশা দিতে কুরআনসহ এ পৃথিবীতে আগমন করেছে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ কারণেই বিদায় হজের ভাষণে মানবজাতির পথনির্দেশনামূলক ঘোষণা দিয়েছেন তিনি-
‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যারা এ দু’টোকে আঁকড়ে ধরবে, তারা পথহারা হবে না। তার একটি হলো কুরআনুল কারিম। আর দ্বিতীয়টি হলো আমার সুন্নাহ।’
সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা তখনই বাস্তবায়ন হবে, যখন কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক হবে মানুষের কাজ। অর্থাৎ কুরআন-সুন্নাহর সঙ্গে মানুষের কাজের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে।
বর্তমান সময়ে মানুষ মুখে কুরআন-সুন্নাহর কথা বলে ঠিকই কিন্তু কাজে তা বাস্তবায়ন করে না। যার ফলে কাজে বরকত হয় না বা কাজ পরিপূর্ণ হয় না। মানুষের এ রকম একটি চরিত্রের কথা তুলে ধরেছেন হজরত শামিম ইবনে ইবরাহিম রাদিয়াল্লাহু আনহু।
তিনি বলেছেন, ‘মানুষ মুখে ৪টি কথা বলে আর কাজে তার বিপরীত করে। অর্থাৎ মুখে বললেও কাজে তা মানে না। আর তাহলো-
>> মানুষ নিজেকে আল্লাহর বান্দা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এ স্বীকৃতির বিপরীতে এমন কাজ করে, মনে হয় সে কারো বান্দা নয় আর তার কোনো মাবুদ নেই।
>> সব মানুষই আল্লাহকে রিজিকদাতা হিসেবে স্বীকার করে। অথচ দুনিয়ার ধন-সম্পদ ব্যতিত তার মন কখনো নিবৃত হয় না। শুধু আরও ধন-সম্পদ চাই-ই চাই।
>> সব মানুষই আখেরাতকে দুনিয়ার চেয়ে উত্তম বলে থাকে। কিন্তু দিন-রাত দুনিয়ার ধন-সম্পদের মোহে, ভোগ-বিলাসে নেশাগ্রস্ত হয়ে আল্লাহর বিধান পালনে পুরোপুরি গাফেল। এমনকি হালাল-হারামের প্রতিও কোনো খেয়াল নেই।
>> সব মানুষই বলে থাকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। অথচ এমন এমন কাজ করে যে, মনে হয় সে কখনো মরবে না। মৃত্যু তাকে স্পর্ষও করবে না। তার কাছে মৃত্যু আসবে না।
বর্তমান সময়ে কুরআন সুন্নাহর ঘোষণা মুখে আছে কাজে বাস্তবায়ন নাই। যে কারণে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলায় মানুষের জীবন মোড়ানো।
মানুষ যখনই কুরআন-সুন্নাহর দিক-নির্দেশনাগুলোর কথা কাজে বাস্তবায়ন করবে তখনই পাবে পরির্পিণ মুক্তি। আর কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকলে ভোগ করতে হবে কঠোর পরিণতি। পরকালের ভয়াবহ শান্তি তার জন্য অবধারিত। সে কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনে মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন-
‘সে কথা বল না যা তোমরা কর না।’
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত কথার সঙ্গে কাজের মিল রাখা। মুখের কথা ও বিশ্বাসের সঙ্গে কাজের ও অন্তরের বিশ্বাস ও বাস্তবায়নে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহর কথা মোতাবেক নিজেদের জীবনকে সাজানোর তাওফিক দান করুন। কথার সঙ্গে কাজের সামঞ্জসত্যা বিধানের তাওফিক দান করুন। আমিন।