বিনোদন প্রতিবেদক, সিটিজেন নিউজ: এ দেশের শোবিজের শোক যেন কাটছেই না। একের পর এক গুণী মানুষগুলো চলে যাচ্ছেন সমৃদ্ধ আঙিনাকে অসহায় করে দিয়ে। চলতি বছর সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ, অভিনেতা টেলি সামাদের পর গত ৭ মে চলে গেলেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী।
তার ভিড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। রাজধানীর ডেমরায় অবস্থিত আজগর আলী হাসপাতালে চলছে তার চিকিৎসা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার একুশে পদকজয়ী এই অভিনেতার মৃত্যু গুজব ছড়িয়েছে। তবে তার স্ত্রী রুনি জামানের দেয়া তথ্যে শেষ খবর পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
এদিকে রুনি জামান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, এই অভিনেতাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার পরিবারের। এ বিষয়ে সরকারের কাছ থেকেও গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এটিএম শামসুজ্জামানের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে শুক্রবার হাসপাতালে যাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তার সঙ্গে যাবেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।
এ বিষয়ে রুনি জামান বলেন, তিনি আগের মতোই লাইফ সাপোর্টে আছেন। তার এখনও জ্ঞান আছে। তবে ডাক্তাররা তার সঙ্গে কাউকে কথা বলতে দিচ্ছেন না। কারণ কথা বললে উনার প্রবলেম হয়। তার হার্টে প্রবলেম। শুক্রবার বিপ্লব বড়ুয়া ও ডা. সামন্ত লাল সেন তাকে দেখতে আজগর আলী হাসপাতালে আসবেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী ১১ মে দেশে ফিরলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাকে অন্য কোনো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে নাকি বিদেশ নেয়া হবে।
আপাতত রুনি জামান তার স্বামীর জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছেন এটিএম শামসুজ্জামান। হঠাৎ অসুস্থবোধ করায় গত ২৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই অভিনেতাকে। ওইদিন এটিএম শামসুজ্জামানকে স্যালাইন দেয়া হয়। তখন হঠাৎ করে তার মলত্যাগে জটিলতা দেখা দেয়।
এ জন্য গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার সফলভাবে শেষ হয় তার। ২৮ এপ্রিল সকালে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ৩০ এপ্রিল তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এদিন বেলা ৩টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
এরপর অবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় গত ৩ মে সকালে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হয়। রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে। গেল শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে এটিএম শামসুজ্জামানের চিকিৎসা তত্ত্বাবধানকারী ডা. রবিউল আলীম এই তথ্যই নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু আবারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্তমানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
এটিএম শামসুজ্জামান অভিনয়ে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি একজন প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার এবং নির্মাতাও।