নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: রূপগঞ্জে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় তারাব পৌরসভা ছাত্রলীগের সহসভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন রফিকুল হক জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেফতার তিন জন হলো- রূপসী প্রধান বাড়ি এলাকার আবুল কালামের ছেলে ও তারাব পৌরসভা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু সুফিয়ান সোহান, গন্ধর্বপুর এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিফ, কর্নগোপ এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আফজাল।
আবু সুফিয়ান সোহান তারাব পৌরসভা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নিশ্চিত করে তারাব পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন বাদল জানান, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার সোহানের বিরুদ্ধে সাংঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এরইমধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে তিনিও সোহানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে গন্ধর্বপুর এলাকায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী ও গন্ধর্বপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পৌরসভা কাউন্সিলর হোসেন আহমেদ রাজীব, গন্ধর্বপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র সাহা,তারাব পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার হোসেন রাসেল, পৌর স্বেবচ্ছাসেবকলীগের ফারুক প্রধান, তারাব পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন বাদল, শিক্ষক শিহাবুর রহমান, আব্দুস সোবহান ও মাহমুদ সোমা প্রমুখ।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে শান্ত করেন।
মমতাজ বেগম বলেন, ‘অপরাধীরা যে দলেরই হউক না কেন তারা কেউ পার পাবে না। আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো। ’
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, গত কয়েকদিন আগে গন্ধর্বপুর এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিফ মেয়েটির কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে টাকা ফেরত দেবে বলে ফোন করে গন্ধর্বপুর বাস স্ট্যান্ডে তার মেয়েকে নিয়ে যায়। টাকা ফেরত নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তৌসিফ, রূপসী এলাকার তানভীর ও সোহাগ এবং কর্নগোপ এলাকার আফজাল তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। পরে রূপসী এলাকা ও কর্নগোপ এলাকার দুটি বাড়িতে তাকে দুই দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে মৌচাক থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।