লাইফস্টাইল ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: সঙ্গী ছাড়া জীবনযাপন অনেকের কাছেই অসম্ভব একটি ব্যাপার। দিনশেষে ঘরে ফিরে প্রিয় মানুষটির কাঁধে মাথা রাখতে না পারলে, অনুভূতিগুলো ভাগাভাগি না করতে পারলে সেই বেঁচে থাকা স্বাদহীন ঠেকতে পারে। একা থাকা একঘেঁয়ে, একা থাকা কষ্টের তবু পৃথিবী জুড়ে প্রতিদিন বাড়ছে একা মানুষের সংখ্যা।
বিভিন্ন মনোবিদ ও গবেষকদের মতে একা থাকাটা আয়ত্ত করতে পারলে লাভ আপনারই! মার্কিন জনগণনায় দেখা গিয়েছে শেষ ৪০ বছরে একা থাকতে চান এমন মানুষের সংখ্যা ২৮ শতাংশ বেড়েছে। ইংল্যান্ডে একটি সমীক্ষার মাধ্যমে উঠে এসেছে, ২০১১ সালে ৫১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সিঙ্গেল ছিলেন।
শুধু গবেষণাই নয়, বিশেষজ্ঞরাও দাবি করছেন, যারা কোনো বিশেষ সম্পর্কে নেই, অর্থাৎ সিঙ্গেল, তারা বেশিদিন সুস্থভাবে বাঁচেন। সিঙ্গেল থাকেলে আরও কী কী উপকার হয়, সেই ব্যাপারগুলোও উঠে এসেছে বিভিন্ন সমীক্ষায়। কী বলছে নানা গবেষণা?
১. ‘আমেরিকান ব্যুরো অফ লেবার স্ট্যাটিসটিকস’-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, সিঙ্গেলরা সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে বেশি দক্ষ হয়। এদের সঙ্গে বন্ধুদের সম্পর্কও ভালো থাকে।
২. বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ফলে এদের মানসিক অবস্থাও ভালো থাকে। সাংসারিক নানা জটে পড়তে হয় না, নিজেদের মনের মতো করে দিনযাপন করতে পারেন বলে মানসিক চাপ থেকে এঁরা মুক্ত থাকেন।
৩. সমীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে যাদের কোনো সঙ্গী নেই, তাদের ঘুম ভালো হয়। বাড়তি চাপ, নানা দায়িত্ব। অন্যের জন্য উদ্বেগ এসব থাকে না বলে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
৪. ‘জার্নাল অফ ফ্যামিলি ইস্যু’-র একটি সমীক্ষা আবার মজার এক তথ্য সামনে এনেছে। তাদের মতে, যাদের সঙ্গী আছেন তাদের তুলনায় সিঙ্গেলদের শারীরিক ওজন কম থাকে। ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি’-র আর একটি সমীক্ষার অবশ্য দাবি, সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরে অনেকেরই অনেকটা ওজন কমে যায়।
৫. কোনো সম্পর্কে না থাকলে, নিজের সঙ্গে সময় কাটানোরও সুযোগ বেশি থাকে। সম্পর্কের ঝুটঝামেলা থেকে দূরে রেখে নিজের শখও বজায় রাখতে পারেন।
৬. একা থাকার ফলে নিজের কাজটুকু গুছিয়ে ফেলেই ঘন ঘন বেড়ানোর সুযোগ থাকে। পরিবারের সকলের ছুটি ও কাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় না। গবেষণা বলছে, একা থাকলে ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে দিয়ে যে আরাম ও আনন্দ পাওয়া যায়, তারও সবটুকুই উপভোগ করতে পারেন সিঙ্গেলরা।
৭. একা মানুষরা একটু বেশি সাবধানী হন বলে দাবি ‘আমেরিকান স্কুল অব মেডিসিন’-এর। সঙ্গে কেউ তাকেন না বলেই তারা নিজের প্রতি একটু বেশি যত্নবান হন, অসুস্থতার সময় বা অন্য কোনো দরকারে কীভাবে তা সামাল দেবেন, সেসব নিয়ে অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখেন।