সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে গিয়ে ঘটকসহ তার সঙ্গীদের গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন চার সন্তানের জননী এক বিধবা নারী।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাতে স্থানীয় পাঁচ লম্পটের লালসার শিকার হওয়া ওই বিধবা নারী বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে পাঁচ ধর্ষকের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার কুলতলীর অফেজউদ্দীনের ছেলে মহসীন হেসেন (৩০), রামচন্দ্রপুরের মুজিবর রহমানের ছেলে সফিকুল (২৪), মৃত আব্দুল দফাদারের ছেলে হান্নান (২৭), দক্ষিণ হাজীপুর দীঘির পাড় এলাকার আদম আলীর ছেলে সফিকুর রহমান বাবু (৩০) ও কাটাখালীর আব্দুস সাত্তার গাইনের ছেলে গোলাম রব্বানীর (২৩)।
জানা গেছে, উপজেলার শ্রীফলকাঠি গ্রামে বসবাসরত ওই নারী নিজের মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে কদমতলা এলাকায় যাওয়ার পর ঘটক ও তার চার সহযোগী কৌশলে তাকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালায়।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, নির্যাতিতার লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে পাঁচ ধর্ষকের একজন স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির আত্মীয় হওয়ায় নির্যাতিতা নারীর পরিবারের সঙ্গে আপোষরফার প্রাথমিক চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও দরিদ্র ওই নারীর পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করছে।
নির্যাতনের শিকার নারী জানান, তার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র দেখানোর কথা বলে ঘটক কুলতলী গ্রামের অফেজউদ্দীন গাজীর ছেলে মহসীন হোসেন তাকে কদমতলায় নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আরও একজন ভালো পাত্রের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে বুধবার বিকেলে তাকে ভাড়াটিয়া মোটরসাইকেল চালক (বাবু) এর সহায়তায় কুলতলী গ্রামে নিয়ে যায় মহসীন।
বিধবা ওই নারী আরও জানান, পথিমধ্যে সন্ধ্যা হওয়ার সুযোগে একই এলাকার একটি চিংড়ি ঘেরের বাসায় আটকে রেখে চার সহযোগীসহ মহসীন তাকে ধর্ষণ করেন।
নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধারকারী ঘের কর্মচারী আলমগীর হোসেন ও শুধাংসু মণ্ডল জানান, রাতে তারা পাহারার সময়ে অনতিদূরের একটি চিংড়ি ঘেরের বাসা থেকে ওই নারীর চিৎকার শুনতে পান। দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই সফিকুল, মহসীন, বাবু, গোলাম রব্বানী ও হান্নানসহ আরও দুইজনকে হেঁটে যেতে দেখেন।
পরবর্তীতে নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধার করে রাতে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নজরুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যান তারা।