ধর্ম ডেস্ক : নেক আমল বা ভালো কাজের মাধ্যমে মানুষ সাওয়াব বা নেকি পায়। নেক আমলের দ্বারা গোনাহ থেকেও মুক্তি মেলে। কিন্তু কিছু কিছু নেক আমল এমন আছে যেগুলোর কারণে মহান আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির গোনাহগুলোকেও নেকিতে পরিণত করে দেন। সেই নেক আমলগুলো কী? এ সম্পর্কে হাদিসের ঘোষণাও বা কী?
যে নেক আমল দ্বারা মহান আল্লাহ বান্দার গোনাহ মাফ করে দেন; পাশাপাশি গোনাহগুলোকে নেকিতে পরিণত করে দেন; তাহলো- মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জিকির করা।
এ জিকির হতে পারে-
১. তাঁর নামের তাকবির (বড়ত্ব) ও তাসবিহ (মহত্ব বর্ণনা) করা।
২. তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করা।
৩. তাঁর হামদ তথা প্রশংসা করা।
৪. আল্লাহর মহিমা (গুণ) সম্পর্কে আলোচনা করা।
৫. তাঁর নেআমতের আলোচনা করা।
৬. তাঁর কাছে গোনাহ মাফে দোয়া-ইসতেগফার করা।
৭. তাঁর সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা ও চিন্তা-গবেষণা করা।
৮. কুরআন তেলাওয়াত করা।
৯. কুরআনের ইলম বা জ্ঞান অনুযায়ী মুযাকারা করা।
১০. দ্বীনী আলোচনা করা এবং
১১. ইলমে দ্বীনের চর্চা করা।
আল্লাহ তাআলা বান্দার এসব কাজে সবচেয়ে বেশি সন্তুষ্ট হন এবং ওই বান্দার গোনাহ ক্ষমা করে দেন। শুধু তা-ই নয়, ওই বান্দার গোনাহগুলোকে নেকিতেও পরিণত করে দেন। উল্লেখিত বিষয়গুলোর অধিকাংশিই আল্লাহর জিকির বা স্মরণ সম্পর্কিত। এসব লোকদের ব্যাপারে হাদিসে এমন ঘোষণা এসেছে-
قُومُوا مَغْفُورًا لَكُمْ، قَدْ بُدِّ لَتْ سَيِّئَاتُكُمْ حَسَنَاتٍ
‘যাও, তোমাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে আর তোমাদের গোনাহগুলোকে নেকিতে পরিণত করে দেওয়া হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকি, মুসনাদে আবু ইয়ালা)
আল্লাহ তাআলা তাঁর জিকিরের দ্বারা শুধু মানুষকে গোনাহ থেকে ক্ষমা করে দেন। মানুষের গোনাহকে নেকিতে পরিণত করে দেন। শুধু তা-ই নয় বরং নবি-রাসুলরাও এ জিকিরের কারণেই কঠিন বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। কুরআনুল কারিমের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে। যেমনি হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে এসেছে-
فَلَوْلَا أَنَّهُ كَانَ مِنْ الْمُسَبِّحِينَ لَلَبِثَ فِي بَطْنِهِ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
‘যদি তিনি আল্লাহর তসবিহ পাঠ না করতেন; তবে তাঁকে কেয়ামতের দিন পর্যন্ত মাছের পেটেই থাকতে হত।’ (সুরা আস-সাফফাত : আয়াত ১৪৩-১৪৪)
মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর স্মরণকেই মানুষের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ বলেছেন এভাবে-
وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ
‘আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ।’
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত,বেশি বেশি মহান আল্লাহ তাআলা জিকির করা। আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে, তাওবাহ-ইসতেগফার ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে নিজেদের গোনাহগুলোকে নেকিতে পরিণত করে নেওয়ার প্রতি মনোযোগী হওয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার বেশি বেশি জিকির করার তাওফিক দান করুন। জিকির সম্পর্কে কুরআনের দিকনির্দেশনার ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।