আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনে ৬ এবং ৭ বছরের শিশুদের আর পরীক্ষা দিতে হবে না। দেশটি এই বয়সী শিশুদের লিখিত পরীক্ষা বাতিল করেছে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বাবা-মা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর যে চাপ পড়ে তা কমিয়ে আনার চেষ্টা হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ছোট ছোট শিশুদের পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি তাদের ওপর যেমন চাপ তৈরি করে ঠিক তেমনি তাদের অভিভাবকরাও এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমে যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই চাপ শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
প্রাইমারি স্কুল থেকেই আগে শিশুদের পরীক্ষা দিতে হতো। এখন থেকে আর তা হচ্ছে না। এক বিবৃতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে পরীক্ষা। কিন্তু অনেক স্কুলেই অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এগুলো শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করছে যা সংশোধন করা প্রয়োজন।
নতুন নিয়মের আওতায় একটি স্কুল বছরে কতগুলো পরীক্ষা নিতে পারবে তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি সেমিস্টারে একটি ফাইনাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। জুনিয়র হাই স্কুলে মিড-টার্ম পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য আঞ্চলিক বা আন্তঃস্কুল পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
জুনিয়র হাই স্কুলের নন-গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক, মাসিক বা এ ধরনের পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।একাডেমিক গবেষণার মতো বিভিন্ন নামেও কোনো পরীক্ষার অনুমতি দিচ্ছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
চীনের সামাজিক মাধ্যম উইবোতে এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, শিশুদের ওপর চাপ কমানোর এটা একটি সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে অনেকেই আবার বলছেন, পরীক্ষা ছাড়া শিশুদের সক্ষমতা কিভাবে যাচাই করা যাবে? চীনের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন এই ঘোষণা ব্যাপক সংস্কারের অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এর আগে চলতি বছর প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আনে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া জুনিয়র হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ সীমিত করে দেওয়া হয়। শিশুদের বাড়িতে রাতে পড়ার জন্য দেড় ঘণ্টা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।