চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো চার শতাধিক মানুষ। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতর আগুন লাগে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
কম্বোডিয়া থেকে আসা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের একটি চালান ডিপোটিতে ছিল। সেখান থেকেই আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার প্রেসিডেন্ট নুরুল কাইয়ুম খান।
বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের অনেক বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মোহাম্মদ শাহজাহান শিকদার বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে রাত ১১টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আটটি ইউনিট এবং পরবর্তীতে আরো আটটি ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র আরো জানায়, কনটেইনারে থাকা রাসায়নিকের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া ডিপো এলাকায় রয়েছে পানি স্বল্পতা। রাত পৌনে ২টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডিপোতে থাকা প্রায় দুইশ’ কনটেইনারে আগুন জ্বলছিল।
এদিকে, দগ্ধদের চমেকের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেককে ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চমেকের পাশাপাশি নগরের অন্যান্য হাসপাতালেও চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ
দিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী। এছাড়াও মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নিতে ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে অনুরোধ জানায় ফায়ার সার্ভিস। একই সঙ্গে রক্তদাতাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি রক্তাদাতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রেড ক্রিসেন্ট। এরপরই চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রক্তাদাতারা হাসপাতালে ছুটে যান। সর্বশেষ রাত ২টা ৫০ মিনিটে হাসপাতাল এলাকায় রক্তদাতাদের ভিড় দেখা যায়।
রাত ২টার দিকে ১০০ জন রক্তদাতা নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চমেক হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় একটি বাস। বাসটিতে থাকা ইমরান হোসেন নামে এক ছাত্র ডেইলি বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।