ইরাকপ্রবাসী দুই বাংলাদেশিকে অপহরণের পর করা হয় নির্যাতন। সেই নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশে স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয় সাত লাখ টাকা। না হলে হুমকি—দুজনকে খুন করে লাশ পাঠানো হবে। শেষ পর্যন্ত অপহরণকারী এই চক্রের দুই সদস্যকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সিটিটিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ওই দুই প্রবাসী হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আপেল আলী ও গাইবান্ধার শের আলী। ১৪ জুন ইরাকে বাগদাদের আবু জাফর আল মনসুর শহর থেকে তাঁদের অপহরণ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্যাতনের ভিডিও পেয়ে চক্রটিকে দুই লাখ টাকা বিকাশ করে দুই প্রবাসীর পরিবার। এরপরও দুজনের ওপর নির্যাতন বাড়িয়ে দেওয়া হয়। দাবি করা হয় আরও পাঁচ লাখ টাকা। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে রাজধানীর মতিঝিল থেকে ইমরান হোসেন (২৭) ও নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি বাজার এলাকা থেকে আলমগীর হোসেন (৩০) নামে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ইমরানের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিটিটিসি জানিয়েছে, অপহরণকারী চক্রের মূল হোতার নাম শফিকুল। তিনি ইরাকে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই তিনি মুক্তিপণের অর্থ সংগ্রহের জন্য বিকাশ বা নগদ নম্বর সরবরাহ করতেন। শফিকুলের নির্দেশমতো ওই অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হতো।
সিটিটিসি বলছে, অপহরকারী এই চক্র বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইরাকের নাগরিকদের নিয়ে গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত। নির্যাতনের ভিডিও পাঠানোর পর মুক্তিপণের অর্থ না পেলে হত্যা করতেও পিছপা হয় না চক্রটি।
এদিকে গ্রেপ্তারের সময় ইমরানের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে প্রায় সাত লাখ টাকা জমা দেওয়ার রসিদ ও একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। আলমগীরের কাছে পাওয়া গেছে দুটি মুঠোফোন। তাদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। তবে ইরাকে ওই দুই প্রবাসী এখন কী অবস্থায় আছেন, তা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি।