ছয় বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের সময় ‘রামদা শাণ’ দেয়া ছাত্রলীগের বিতর্কিত দুই কর্মী আবারও আলোচনায়। চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে আবারও আলোচনায় আসলেন তারা দুজন।
২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ফজলে রাব্বি সুজন। ২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ছিল মুখরিত। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীরা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় শাহজালাল হলের তৃতীয় তলায় বারান্দায় রামদায় শাণ দিতে দেখা গিয়েছিল দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে। একটি জাতীয় পত্রিকায় সেই ছবিটি এসেছিল। ছবিটি নিয়ে সেই সময় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছিল।
সেই সময় ছবিটির জেরে দুজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরের বছর পরীক্ষা দিতে না পেরে চারুকলা ইনস্টিটিউটে তালা ও ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। দুজনই ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইনের কর্মী হিসেবে পরিচিত।
যদিও এবার তারা আলোচনায় এসেছেন চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে। মোফা ও শ্রাবণ দুজনেই পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ। তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের কমিটিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া নিয়ে সমালোচনা করছেন খোদ ছাত্রলীগ নেতারাই। পদবঞ্চিতদের দুদিনের অবরোধে উঠে এসেছে তাদের কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবিও।
মোফা চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র। তিনি টাইগার মোফা নামে ক্যাম্পাসে অধিক পরিচিত। বহিষ্কারাদেশে তাকে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিক্ষুব্ধ হয়ে ৪০-৪৫ জন ছাত্রলীগের কর্মী নিয়ে পরীক্ষা বন্ধের উপক্রম করেন মোফা। অন্যদিকে শ্রাবণ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ।
বর্তমানে তারা দুজনই ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ঘোষিত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তারা স্থান না পেলেও সম্প্রতি ঘোষিত কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পান।
এদিকে রোববার (৩১ জুলাই) মধ্যরাত থেকে নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিতরা মোফা ও শ্রাবণের মতো বিতর্কিতদের কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেন।
আন্দোলনকারী চবি ছাত্রলীগের গ্রুপ বিজয়ের কর্মী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অছাত্র, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও জামাত-শিবিরের সহযোগীরা স্থান পেয়েছে। অথচ আমরা যারা শেখ হাসিনার জন্য কাজ করে যাচ্ছি তাদের নাম নেই। তাই কমিটি থেকে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী ও আসামিদের বহিষ্কারের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি।’