প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে–এমন আশ্বাসে অবশেষে চা-শ্রমিকরা আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।
রোববার (২১ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। গভীর রাত পর্যন্ত এ বৈঠকের পর জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে সোমবার (২২ আগস্ট) থেকে আগের মজুরিতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিকরা।
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, চা-শ্রমিকরা যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরম শ্রদ্ধা করেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আজকের এ সিদ্ধান্ত। চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রেখে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা সেটাই মেনে নেব।’
জানা গেছে, রাতের বৈঠকে চা-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় শ্রম কর্মকর্তারা অংশ নেন। চা-শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা ও শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক প্রাণ গোয়ালাসহ একাধিক নেতা ছিলেন।
এদিকে চা-শ্রমিকদের বিরল ধর্মঘটে ১২ দিন ধরে সারা দেশের বাগান থেকে চাপাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ থাকে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের চা-শিল্প। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীত করার দাবিতে দেশের ২৪১ চা-বাগানে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। এর আগে তারা প্রতিদিন ২৩ কেজি চাপাতা উত্তোলন করে ১২০ টাকা মজুরি পেতেন।
এখন চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। গত কয়েক দিনে গাছে গাছে সবুজ পাতা আর কুঁড়ি অঙ্কুরিত হয়েছে। কারখানায় নিয়ে এসব পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণের ঠিক এ সময়ে স্থবির হয়ে পড়ে চা-শিল্পের যাবতীয় কর্মযজ্ঞ। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়। এর মধ্যে কেবল মৌলভীবাজারেই নষ্ট হয়ে গেছে ৩১ কোটি টাকার চাপাতা।