ইংলিশ ফুটবলে আলো ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন। ফুটবল নিয়ে যারা খোঁজ খবর রাখেন, তাদের কাছে তিনি পরিচিত একটি নাম- হামজা চৌধুরী। ইংলিশ ফুটবলে প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশি হিসেবে পেশাদার ফুটবল খেলছেন। লিস্টার একাডেমিতে বেড়ে ওঠা এই ফুটবলার আগেও পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের হয়ে খেলার ভাবনার কথা বলেছিলেন। এবার অবশ্য স্পষ্ট করে আগ্রহের সঙ্গে জানালেন, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলে সেটা হবে তার জন্য আরও বেশি গর্ব ও সম্মানের।
বর্তমানে ওয়াটফোর্ডে ধারে খেলা হামজার জন্ম ইংল্যান্ডেই। মা বাংলাদেশি হলেও বাবা গ্রেনাডিয়ান। শিশু কাল থেকেই পরিবারের সঙ্গে নানার বাড়ীতে রয়েছে যাতায়াত। তার নানার বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামে। এরই মধ্যে তার ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে।
স্কাই স্পোর্টসের সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে হামজা বলেছেন, ‘হ্যাঁ। অবশ্যই খেলতে চাই।’
অবশ্য আগে বাংলাদেশের খেলার ক্ষেত্রে ইংলিশ ফুটবলে নিজের অবস্থান দেখে নিতে চান ২৪ বছর বয়সী মিডফিল্ডার, ‘আমি আসলে আগামী কয়েক বছর নিজে কতটুকু উন্নতি করছি, সেটা দেখতে চাই। তবে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলে সেটা হবে আরো গর্ব, আরো সম্মানের। আরো বড় বিষয় তাতে সেখানে নিয়মিত যাওয়া হবে।’
হামজা কথাগুলো বলছিলেন, ওয়াটফোর্ডের অনুশীলন মাঠে। সেখানে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আবার মুসলিম ক্রীড়াবিদদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা নুজুম স্পোর্টসের অ্যাম্বাসেডরও করা হয়েছে তাকে। দূরে থাকলেও তিনি জানিয়েছেন, সিলেটে নিজের শেকড়ের প্রতি এখনও গভীর টান অনুভব করেন। তাই নিজের সন্তানদের স্বদেশে কাটানোর সুযোগটা দিতে চান।
তিনি বলেন, ‘আসলে এখানকার সাফল্যে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া দেখে শুরুতে অবাক হয়েছিলাম। বিশেষ করে বিভিন্ন শুভেচ্ছা বার্তা আসার আগ পর্যন্ত বিষয়টা আমার অনুভূতির বাইরে ছিল। দেখা গেছে আমার মা সারা রাত জেগে আছেন। যেহেতু আমার খালামনি বা আমার কাজিনরা ফোন করছিলেন। এটাই আমার চোখ খুলে দিয়েছে- পেশাদার ফুটবলার হিসেবে একজন কতটা দূর পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করতে পারে। বিশেষ করে একজন দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলার হিসেবে।’
এই কারণেই এই যোগাযোগের বন্ধন অটুট রাখতে মরিয়া হামজা, ‘বিষয়টা এমন কিছু যার সঙ্গে গভীর টান অনুভব করি। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চাই। এবং আমার অভিজ্ঞতা আমার লোকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার পাশাপাশি তাদের সাহায্যে আসতে চাই।’
তিনি আরো যোগ করে বলেছেন, ‘শীতকালে হয়তো বাংলাদেশে যাবো। দেখা যাক কাতার বিশ্বকাপের জন্য কতদিন ছুটি পাই। নিজের শৈশবের স্বর্ণালী ছোঁয়া দিতে বাচ্চাদেরও সঙ্গে নিতে চাই। আমার যখন এক বছর, তখন থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে যাতায়াত। সত্যি করে বলতে আমার কাছে সেটা ভিন্ন এক দুনিয়া।’