অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে এক ফিলিস্তিনি কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তিনজন। নিহত কিশোরের কাছে বোমা থাকায় তাকে গুলি চালায় বলে দাবি করেছে ইসরাইলি সেনারা। এ ঘটনার পর কিশোরের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেন সাধারণ মানুষ।
ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রাণ হারানোর বিষয়টি যেন প্রতিদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গত শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে হতাহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, বুধবার (০৯ নভেম্বর) নাবলুসের একটি শরনার্থী শিবিরে অভিযান চালায় ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পড়েন সেনারা। পাল্টা জবাবে কাঁদানে গ্যাস ও ফাঁকা গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। একপর্যায়ে শরণার্থী শিবিরের সামনে দাঁড়ানো মাহাদি মাশাহ নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
তবে ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, অভিযান চালানোর একপর্যায়ে নিহত মাহাদির হাতে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে তার একটি হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সেনারা।
এদিকে মাহাদি নিহতের পর তার মরদেহ নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে নাবলুস শহরে। এ সময় ইসরাইলি সরকার ও সেনাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম দাউদ মোহাম্মদ। তার বয়স ৪২ বছর। দাউদ মোহাম্মদের হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে, আধা সামরিক সীমান্তরক্ষীরা দাউদ মোহাম্মদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। পুলিশের দাবি, বুধবার (২ নভেম্বর) এক ইসরাইলি সেনার গাড়িতে ধাক্কা দেন দাউদ।
একই দিন ৩২ বছর বয়সী রাবি আরাফাহ রাবি নামে এক যুবককে পশ্চিম তীরের কোয়ালকিলিয়া এলাকায় মাথায় গুলি করে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার তথ্যমতে, ইসরাইলি বাহিনীর হাতে চলতি বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৮ অক্টোবর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র টোর উইন্সল্যান্ড বলেন, ২০০৫ সালের পর চলতি বছর ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এরই মধ্যে ওই অঞ্চলে বিস্ফোরক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদি এখনই দুপক্ষের আলোচনা শুরু না হয়, তবে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা কল্পনারও বাইরে।