নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: যে কৃষক তেভাগা আন্দোলনে আওয়াজ তুলেছিল ‘জান দেব, তবু ধান দেব না’ বলে, সেই কৃষক আজ দাম না পেয়ে ক্ষেতের ধান পুড়িয়ে দিচ্ছে। এর দায় সরকারকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
তিনি বলেন, সরকার কৃষিতে ভর্তুকি দিচ্ছে। বিষয়টাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু কৃষিপণ্য ক্রয়েও ভর্তুকি দিতে হবে। পোশাক কারখানা মালিক, ঋণখেলাপি, কালো টাকার মালিকরা প্রণোদনা পায় কৃষক তার শস্য বিক্রিতে কেন প্রণোদনা পাবে না।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে যুক্তফ্রন্ট আয়োজিত ‘বাজেট-২০১৯-২০, বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মোস্তফা বলেন, আজ ধান উৎপাদনে বেশি খরচের পিছনে ক্ষেতমজুরদের মজুরিকে অজুহাত হিসেবে তুলে ধরে কৃষক ও ক্ষেতমজুরকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ মাত্র তিন মাসের কাজের সময়ে ক্ষেতমজুররা দৈনিক ৭০০-৯০০ টাকা পায়, যা দিয়ে তাদের পুরো বছরের সংসার চালাতে হয়। উল্টো এই কামলার অভাবকে পুঁজি করে এবারের বোরো মৌসুমী সরকারি কর্তা ব্যক্তিরা ও বিভিন্ন সংগঠন যেভাবে জিন্স, টি-শার্ট, নতুন লুঙ্গি-গামছা পরে ফটোসেশনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিল, তা দিয়ে ক্ষেতমজুরদের উপহাস করা হয়েছে।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, সরকার ঘোষিত বাজেটে যে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে, তা কি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য? উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করতে পারছে না দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ। তা ভোগ করা মানুষের পরিমাণ পাঁচ শতাংশ, যারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বও করে না। তারা সুযোগ পেলেই বিদেশে অর্থপাচার করে আসেন। গত ১০ বছরে ছয় লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে খবর এসেছে। এই পাচারের ক্ষমতা সাধারণ মানুষ রাখেন না।
তিনি বলেন, অর্থপাচার নিয়ে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। তার মানে সরকার জানার পরও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। অথচ এটি একটি গুরুতর সমস্যা এবং সমাধান সময়ের দাবি।
যুক্তফ্রন্টের সমন্বয়কারী ও বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সারোওয়ার মিলনের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ গণ সংস্কৃতি দলের (বাগসদ) সভাপতি সরদার শামস আল মামুনের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান, বিকল্পধারা প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নেন বিকল্পধারা মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, শমসের মোবিন চৌধুরী, মাহি বি. চৌধুরী, শাহ মাজহারুল হক চৌধুরী, বিএলডিপি চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দিন আল আজাদ, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বিকল্পধারার সহ-সভাপতি এনায়েত কবির, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশ জনদল চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, সেলিম আহমেদ, বাংলাদেশ মরিয়াহ আন্দোলনের আমীর মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ জনতা লীগ চেয়ারম্যান শেখ ওসমান গনি বেলাল প্রমুখ।