নিজস্ব প্রতিবেদক
মৌচাক মালিবাগে “লিলি প্লাজা” মার্কেটটির মালিক মির্জা মোসলেমা আক্তারকে জীবন নাশের হুমকিসহ মার্কেটটি দখলে নিতে চেষ্টা করছে ভিভো বিল্ডার্স লিঃ কোম্পানীর কথিত এমডি জুয়েল মুন্সী ও চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন। এদের কারণে দুটো এতিম সন্তান মির্জা মুন্নাফ বেগ ও নাহরিন মির্জাকে নিয়ে মোসলেমা আক্তার চরম নিরপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ভিভো বিল্ডার্স লিঃ ও তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকিতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গত ১৭/০২/২০২৩ইং তারিখে রমনা থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছে অসহায় এই পরিবার। জিডি নং-১০৫৯। একই সঙ্গে ১৪/০২/২০২৩ইং তারিখে বিজ্ঞ জেলা ঢাকার ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেছে। মামলা নং ১৫৩।
আদালতের মামলা ও জিডি সূত্রে জানা যায়, লিলি প্লাজা মার্কেট সাং ৯৩ নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ, রমনা ঢাকা- ১২১৭ এর ওয়ারিশ সূত্রে মালিক মোসলেমা আক্তার মীর্জা, তার ছেলে মীর্জা মুন্নাফ বেগ ও কন্যা নাহরিন মীর্জা। উক্ত মার্কেটটি ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণ করার জন্য বিগত ০৪/০৪/২০২২ ইং তারিখ VIVO Builders Ltd. সাং ১৮/সি ৪র্থ তালা র্যাংকিং স্ট্রীংকি স্ট্রিট ওয়ায়ী, ঢাকা-১২০৩ এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তির শর্ত মোতাবেক মোসলেমা আক্তার মির্জা ও তার ছেলে কথিত ডেভেলপার কোম্পানীর এমডি মোঃ জুয়েল মুন্সীকে দলিল নং ১৮৩৮ মূলে রেজিস্ট্রি পাওয়ার করে দেয় এবং কন্যা নাহরিন মীর্জা বিগত ২৬/০৬/২০২২ ইং তারিখ রেস্ট্রি পাওয়ার নামা দলিল নং ৩৩৮৮ মূলে রেজিস্ট্রি পাওয়ার করে দেয় কিন্তু VIVO Builders Ltd. চুক্তি শর্ত ভঙ্গ করে তাদের সাথে প্রতারণা করার কারণে বিগত ১/১২/২০২২ ইং তারিখ পাওয়ার অব এ্যাটর্নি আইনে ২০২২ এর ০৩ উপ ধারা মোতাবেক পাওয়ার নামা দলিল দুইটি বাতিলের জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করে এবং বিগত ১৪/০২/২০২৩ ইং তারিখ ঢাকা জেলার ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে উপরোক্ত দুইটি রেজিস্ট্রি পাওয়ার নামা দলিল বাতিলের জন্য দেওয়ানী মোকাদ্দমা নং-১৫৩/২০২৩ দায়ের করেছে মোসলেমা আক্তার মির্জা।
জিডির সূত্র ধরে লিলি প্লাজা মালিক মোসলেমা আক্তার মির্জা ও সন্তান, মির্জা মুন্নাফ বেগ ও নাহরিন মির্জাসহ তাদের ঘনিষ্টজন এবং মার্কেট সূত্র থেকে জানা যায়, ভিভো ডেভেলপার কোম্পানীর চেয়ারম্যান মোঃ আব্বাস উদ্দিন আহমেদ ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ জুয়েল মুন্সীর সাথে লিলি প্লাজার মালিক পক্ষ মোসলেমা আক্তার মির্জা গংয়ের সাথে গত ০৪/০৪/২০২২ ইং তারিখ ১৪ তলা ভবন নির্মাণে শর্ত সাপেক্ষে দ্বীপাক্ষিক চুক্তিতে এই মর্মে অবদ্ধ হন যে সাইনিং মানিদ্বয় ৬ কোটি টাকা তিন কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা ছিল, প্রথম কিস্তির ২ কোটি টাকা আম- মোক্তার নামা দলিল হওয়ার পর দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ১৩ লক্ষ টাকা এবং দুটো দোকানের অগ্রীম গ্রহণ পরিশোধ বাবদ ২০ লক্ষ থেকে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা প্রদান করে অবশিষ্ঠ টাকার বিপরীতে আইএফআইসি ব্যাংকের ৪টি চেক প্রদান করলেও বাস্তবে সবকটি চেক ডিজওনার হয়, অর্থাৎ ভিভো নামধারী ডেভেলপার কোম্পানী থেকে লিলি প্লাজার মালিক পক্ষ মোসলেমা আক্তার মির্জা গং শুধুমাত্র তের লক্ষ টাকা ছাড়া আর কোনো টাকা-পয়সা পায়নি। কথিত ডেভেলপার কোম্পানী শর্তানুযায়ী কোনো টাকা-পয়সা না দিয়ে রাতের বেলায় এলাকার কিছু ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীবাহিনীকে নিয়ে লিলি প্লাজায় একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় এবং এই সন্ত্রাসী বাহিনী লিলি প্লাজার দোকান ও অফিসের লোকজনদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে দোকান অফিস ছেড়ে চলে যেতে বলে এবং লিলি প্লাজার মালিক মোসলেমা আক্তার পরিবারকে ভাড়া দিতে নিষেধ করে, আর এসব কারণে মির্জা মোসলেমা আক্তার পরিবার লিলি প্লাজার ভাড়া ঠিকমত আদায় করতে পারছে না। এমনটি জানিয়েছে অসহায় লিলি প্লাজার মালিক পরিবার।
লিলি প্লাজার ওয়ারিশসূত্রে মালিক মোসলেমা আক্তার মির্জা গং। বিধবা এই নারীর একটি মাত্র মেয়ে নাহারিন মির্জা দেশের বাইরে থাকেন। ছেলে মির্জা মুন্নাফ বেগকে নিয়ে অসহায় বিধবা এই নারী দেশেই থাকেন। তাদের লিলি প্লাজার সম্পদটি আয়ের অন্যতম উৎস। কিন্তু জালিয়াত এই চক্রটি বিভিন্ন ভাবে কৌশলে সাইনিং মানি ছয় কোটি টাকার প্রলোভণ দেখিয়ে সহজ সরল এই নারী ও তার পরিবার থেকে লিলি প্লাজার জায়গায় বহুতল ভবন করে দেওয়ার নাম করে শর্ত সাপেক্ষে পাওয়ার দলিল রেজিস্ট্রি করে নেয়। যখন দলিল চুক্তি শর্ত ভঙ্গ করে জোর পূর্বক লিলি প্লাজায় সাইনবোর্ড লাগিয়েছে এবং কিছু দোকানদার থেকে ভূয়া কাগজপত্র বানানোসহ ভূয়া চেক প্রদান এবং বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার কিছু ভাড়াটিয়া দখলবাজ মাস্তান দিয়ে ভয় ভীতি ছাড়াও জীবন নাশের হুমকি আসছে।
ভিভো ডেভেলপারের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মাসুদ রানা ও তার সহযোগী শাহ আলম সাইনবোর্ড লাগানোর পর প্রতিনিয়ত লিলি প্লাজার বিভিন্ন দোকান ও অফিসের লোকদের পজিশন ছেড়ে যেতে হুমকি প্রদান করছে।
এ অবস্থায় অসহায় এই মির্জা পরিবার থানা-পুলিশ, আইন-আদালতসহ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের সম্পদ এবং জীবন রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।