জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আজ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার ভাই, বাংলাদেশের আধুনিক ফুটবলের অন্যতম পথিকৃৎ এবং আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতিও ছিলেন শেখ কামাল।
তিনি আজাদ বয়েজ ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগে ক্রিকেট এবং স্পার্স ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগে বাস্কেটবলও খেলতেন। একজন ক্রীড়া সংগঠক ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন শেখ কামাল।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বিশিষ্ট ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শেখ কামাল ঢাকা থিয়েটার এবং লোকগানের মিউজিক্যাল ব্যান্ড দল স্পন্দন শিল্প গোষ্ঠীরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। কামাল ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন এবং যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর এডিসির দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন এবং লেখাপড়ায় মনোযোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
শেখ কামাল ছিলেন দেশের ইতিহাসের সফল ক্রীড়া সংগঠক ও বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে দেশকে তিনি অনেককিছু দিয়ে গেছেন। সর্বোচ্চ ক্ষমতার বলয়ের খুব কাছে থেকেও তিনি ছিলেন নিজ গুণে উজ্জ্বল। মুক্তিবাহিনীর সুদক্ষ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের মধ্য থেকে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত ৬১ জনের মধ্যে শেখ কামাল ছিলেন অন্যতম। তিনি মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা বাহিনীর সংগঠনে ও তাঁদের প্রশিক্ষণে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। ছাত্রলীগের কর্মী ও সংগঠক হিসেবে তিনি ৬ দফা, ১১ দফা আন্দোলন এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে বীরোচিত অংশগ্রহণ ছিল তার। অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতার অধিকারী শেখ কামাল সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন্ড লাভ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এমএজি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ষড়যন্ত্রকারীদের পৈশাচিক হামলায় নিহত হওয়ার সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের এমএ শেষপর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর মাত্র এক মাস আগে ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু খেতাবপ্রাপ্ত দেশসেরা অ্যাথলেট সুলতানা খুকুকে তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে শেখ কামালের ঘটনাবহুল জীবনের সমাপ্তি ঘটে। শেখ কামাল বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একটি অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর মধ্যে ছিল অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলী।
মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি: পরিচালক, বিজিএমইএ; শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ; চেয়ারম্যান, নিপা গ্রুপ ও কেসি ফাউন্ডেশন