সিটিজেন প্রতিবেদকঃবৃষ্টি উপেক্ষা করে ময়মনসিংহ নগরীতে ছাত্র-জনতার গণমিছিল ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) বেলা ২টার পর নজরুল স্কয়ার চত্বর থেকে ছাত্র-জনতার গণমিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, শহিদ মিনার, মিরপুর, উত্তরা, আফতাবনগর, সায়েন্সল্যাব ও বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার সকাল থেকে শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শিল্পী, চিকিৎসকেরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তারা গণমিছিলসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। গণমিছিলটি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে শুরু হয়ে রামপুরা ব্রিজ ঘুরে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে যায়। পরে গণমিছিলটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে আবারও রামপুরা ব্রিজ হয়ে দুপুর ১২টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে গিয়ে শেষ হয়।
দুপুরে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গণমিছিলে অংশ নেন।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদ এবং কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্র-জনতার ব্যানারে পূর্ব ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দ্রুত নয় দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। পরে তারা প্রেস ক্লাবের অবস্থান ছেড়ে হাইকোর্টের সামনে দিয়ে শাহবাগের দিকে চলে যান।
অন্যদিকে, বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ শেষে গণমিছিল শুরু করেন কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম থেকে পল্টনের দিকে যেতে থাকে। পরে শাহবাগ পৌঁছালে মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ।
সকাল ১০টার দিকে ঢাকার উত্তরায় রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সামনে গণমিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন কলেজের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক ও অভিভাবক। এ সময় শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ।
বিকেলে মিরপুরের ইসিবি চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করছেন কয়েক শ’ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের এসব অবস্থান থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। আটক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেও স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত শিল্পী ও সাধারণ মানুষ আজ ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে শামিল হন। তারা নিহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার এবং হত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি করেন।
এছাড়া সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সকালে বাংলামোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সামনে বিক্ষুব্ধ ‘কবি-লেখক সমাজ’ ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
বাংলামোটরে পরিকল্পনাবিদরাও মানববন্ধন করেছেন। তারা বলেছেন, সমাজে প্রতি পায়ে-পায়ে ভয়। কিন্তু এই শিক্ষার্থীরা কোনো ভয় পান না। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য পথে নেমেছে। আর কোনো শিক্ষার্থী যেন হয়রানি ও গুলির শিকার না হন। যেসব জায়গায় এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়।