নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: বন্যা পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে আরো সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে ব্র্যাক। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর খাবার পানির সংকট, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় এই টাকা ব্যয় করা হবে। এ নিয়ে মোট ৪ কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে ব্র্যাক।
নতুন এই বরাদ্দের মধ্যে প্রায় আড়াই কোটি টাকা (৩ লাখ ডলার) আসছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফউন্ডেশন থেকে। জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য। বাকি এক কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে ব্র্যাকের নিজস্ব উৎস থেকে।
আরো জানা গেছে, এই আর্থিক সহায়তার মধ্যে থাকছে পরিবার প্রতি নগদ ৪,৫০০ টাকা, খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো, হাইজিন কিট বিতরণ, স্কুল ও ঘরবাড়ি মেরামত, শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার জন্য নৌকা ক্রয় প্রভৃতি।
বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত চারটি উপজেলায় অন্তত ৬ হাজার পরিবারকে এর মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হবে। এই চারটি উপজেলা হচ্ছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের চৌহালি, গাইবান্ধা সদর ও কুড়িগ্রামের চিলমারী।
এ ব্যাপারে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, “বন্যা চলাকালীন ত্রাণ কার্যক্রমের চেয়ে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনকাজ কোনো অংশেই কম চ্যালেঞ্জিং নয়। কেননা, তখন কর্মহীনতা, খাবার পানির সংকট এবং বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যেহেতু সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এবারের বন্যাকে অন্যতম খারাপ পরিস্থিতি বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে, তাই সামর্থ্যবান প্রত্যেককেই ত্রাণকার্যে এগিয়ে আসা হবে।”
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফাউন্ডেশনের চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার এবং গ্লোবাল পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রেসিডেন্ট মার্ক সুজম্যান বলেন, “বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রতি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে গভীর সমবেদনা। বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানোর জন্য আমরা এই জরুরি অনুদানের ব্যবস্থা করেছি। অর্থ ব্যয় হবে পানিবাহিত রোগের বিস্তার রোধ এবং বন্যা পরবর্তী সময়ের অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে।”
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যাদুর্গত ১৩ জেলার ৩৬টি উপজেলায় জরুরি ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে ব্র্যাক। এ পর্যন্ত ১৪,০০০-এরও বেশি পরিবারকে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া খাবার স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি ও নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করতেও কাজ করছে সংস্থাটির এক হাজারেরও বেশি ত্রাণকর্মী। বিভিন্ন উপজেলায় ৫০টি পরিবারকে গবাদিপশুর খাদ্য কেনার জন্যও সহায়তা দেওয়া হয়েছে।