বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামি ও তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সোমবার ‘নো অর্ডার’ এর আদেশ দেন।
আজকের এই আদেশের ফলে মিন্নির মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
আজ আদালতে মিন্নির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন মেহেদী, আইনুন নাহার সিদ্দিকা, ব্যারিস্টার অনিক আর হক, আইনজীবী এম মঈনুল ইসলাম, মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম, রোহানি সিদ্দিকা ও জামিউল হক ফয়সাল। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পি। এ সময় আদালতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মিন্নির জামিনের রায় ঘোষণা করেন। জামিনের ওই রায়ে হাইকোর্ট বলেন: জামিন পেয়ে তিনি (মিন্নি) তার বাবার জিম্মায় থাকবেন এবং মিডিয়ার সামনে কথা বলতে পারবেন না।
গত ৩০ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মিন্নির জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। তার আগে গত ২১ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালত মিন্নির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যার ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশাকে। কিন্তু আয়েশার শ্বশুর মামলার ১৮ দিন পর গত ১৩ জুলাই এই হত্যাকাণ্ডে আয়েশা জড়িত এমন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করার পর মামলাটির তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়।রিফাত হত্যা-মামলা-মিন্নির জামিন
পরবর্তীতে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় মিন্নিকে। আর এই মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
অন্যদিকে গত ২ জুলাই এই মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।
সর্বশেষ গত ১ আগস্ট মিন্নিসহ ২৪ জনকে এই মামলায় আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দেওয়া ওই অভিযোগপত্রে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে রিফাত ফরাজীকে, যিনি বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। আর নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকে করা হয়েছে মামলার ৭ নম্বর আসামি, যে মিন্নি এই মামলার এজাহারে ছিলেন এক নম্বর সাক্ষী।