শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

আগামী মাসেই জারি হচ্ছে এমপিওভুক্তির প্রজ্ঞাপন

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ২৬৩ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহুল আলোচিত ও কাঙ্ক্ষিত এমপিওভুক্তির চূড়ান্ত তালিকা প্রজ্ঞাপন আকারে আগামী মাসেই জারি হচ্ছে। বর্তমানে তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। বিশেষ করে তালিকায় কতগুলো স্কুল, কলেজ, মাদরাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থান পাবে তা নিয়ে টানাপোড়েন রয়েছে। তবে শিক্ষামন্ত্রী দেশে ফিরলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সবমিলিয়ে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই জারি হতে পারে বহুল কাঙিক্ষত প্রজ্ঞাপন।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী দেশে ফিরলেই এ ব্যাপারে সর্বশেষ জটিলতাও কাটবে এবং এরপরই প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। তখন প্রজ্ঞাপন জারি করতে আর কোনো বাধাই থাকবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ) শীর্ষ পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকার ঘষা-মাজা শেষ হয়েছে। তবে তালিকায় কতগুলো স্কুল, কলেজ, মাদরাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থান পাবে তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে।

সূত্র জানায়, জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার শর্তেই এমপিওভুক্ত করা হবে বেসরকারি নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। প্রাথমিকভাবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে আগামী তিন বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে এক হাজার ৭৬৩টি স্কুল ও কলেজ এ তালিকায় স্থান পেতে পারে। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। তবে এর সংখ্যা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। অস্থায়ী অনুমোদন বা তালিকায় স্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া শর্ত যথাযথভাবে পূরণে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির সুবিধা বাতিল করা হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ধরন অনুসারে আলাদা আলাদা পরিপত্র জারি করা হবে। নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা পরিপত্র জারি হতে পারে। একই পরিপত্রে সব প্রতিষ্ঠানে অনুমোদন দেয়া হলে নানা জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। জটিলতা এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।

ঈদুল আজহার পর গত ১৪ আগস্ট শর্ত পূরণ করা প্রায় দুই হাজার ৭০০ স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল বলে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এমপিওর জন্য প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক জাবেদ আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। কিন্ত সে তালিকা দফায় দফায় ফেরত আসছে এবং বারবার সংশোধন করা হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। প্রজ্ঞাপন যে দিনই জারি হোক, তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা গত ১ জুলাই থেকেই এমপিওর সুবিধা পাবেন।’

সচিব বলেন, ‘আগামী ২২ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভারত থেকে দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তিনি দেশে ফিরলে তার স্বাক্ষরের পর এমপিওভুক্তির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশোধিত তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সকল কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় রেখেই নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে জারি করা নীতিমালাকে প্রাধান্য দিয়ে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। নীতিমালার কঠোর শর্ত কিছুটা শিথিল করে হাওর, চরাঞ্চল, পাহাড়ি এলাকা, অনগ্রসর এলাকার কিছু প্রতিষ্ঠানকে এমপিও আওতায় আনার এবং বাদ পড়া উপজেলায় অন্তত একটি করে হলেও প্রতিষ্ঠান এমপিওর তালিকায় স্থান দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো তালিকায়।

জানা গেছে, সারাদেশের ৮৯টি উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। সমতার স্বার্থে ওইসব উপজেলায় শর্ত শিথিল করে শিক্ষায় অনগ্রসর, ভৌগোলিকভাবে অসুবিধাজনক, পাহাড়ি, হাওর, চরাঞ্চল, নারীশিক্ষা, সামাজিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। নীতিমালা ও যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে না পারাদের এমপিও আওতায় আনতে শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তবে, তা যোগ্যতার নূন্যতম ৫০ নম্বর প্রাপ্তি সাপেক্ষে।

বর্তমানে সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৬ হাজারের বেশি। এগুলোতে কর্মরত প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি মাসে বেতন ও কিছু ভাতা সরকার দিয়ে থাকে। এমপিওভুক্তি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি কর্মসূচি। এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ড স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে সাড়ে ৫ হাজারের মতো। এখানে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ৮০ হাজারের মতো শিক্ষক-কর্মচারী। গত বছর (জুলাই ২০১৮) জারি করা এমপিও নীতিমালা অনুসারে এখন এমপিওর জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে দুই হাজার ৭৬২টি। এর মধ্যে বিদ্যালয় ও কলেজ এক হাজার ৬২৯টি এবং মাদরাসা ৫৫১টি ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি।

২০১৮ সালে জারি করা জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ করা বা যোগ্য হিসেবে দুই হাজার ৭৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করেছে মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই কমিটি। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজ এক হাজার ৬২৯টি এবং মাদরাসা ৫৫১টি ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি। এমপিওভুক্তির জন্য ৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল।

জানা গেছে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৮৬৫ কোটি টাকা। এক হাজার ৭৬৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হলে তাতে ব্যয় হবে ৭৯৬ কোটি ৪৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। বাকি ৬৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা মন্ত্রণালয়ের হাতে উদ্বৃত্ত থাকবে। বুয়েটের তৈরি করে দেয়া বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এমপিওভুক্তির নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করেছে।

সারাদেশে এমপিওভুক্তির জন্য চূড়ান্ত করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫১টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, এক হাজার দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৭টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ৯৪টি উচ্চমাধ্যমিক কলেজ এবং ৫৩টি ডিগ্রি (অনার্স-মাস্টার্স) পর্যায়ের কলেজ রয়েছে। এর বাইরে রয়েছে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মোট আবেদন জমা পড়েছিল ৬ হাজার ১৪১টি।

৫৫১টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে এক বছরে ব্যয় হবে ১৯১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। একইভাবে এক হাজার দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ৪৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ৬৭টি স্কুল অ্যান্ড কলেজের জন্য ৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ৯৪টি উচ্চমাধ্যমিক কলেজের জন্য ৮৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং ৫৩টি ডিগ্রি (অনার্স-মাস্টার্স) পর্যায়ের কলেজের এমপিওভুক্তিতে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। মোট ব্যয় হবে ৭৯৬ কোটি ৮৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব কয়টি প্রতিষ্ঠানকেই এমপিওর আওতায় নেয়ার দাবি জানিয়ে গত কয়েক বছর ধরে এমপিওর দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাহমুদন্নবী ডলার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এমপিওভুক্তি নিয়ে আমরা নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উদ্বিগ্ন ও হতাশার মধ্যে রয়েছি। শিক্ষামন্ত্রী আমাদের কাছ থেকে দেড় মাস সময় নিয়েছিলেন। এখন ছয় মাস সময় অতিবাহিত হতে চলেছে। যদিও মন্ত্রী বর্তমানে তার স্বামীর অসুস্থতাজনিত কারণে অনেকটাই বিব্রত। আমরা তার স্বামীর আশু সুস্থতা কামনা করছি।’

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ১৭-১৮ বছর ধরে বিনা বেতনে এই পেশায় রয়েছে জানিয়ে ডলার আরও বরেন, অনেকের বয়স শেষের দিকে। আশা করি, মানবিক বিবেচনায় নীতিমালার শর্ত শিথিল করে হলেও প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকদের বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

আজ থেকে স্কুলে ভর্তি আবেদন শুরু, নেই মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটা সিটিজেন প্রতিবেদকঃ সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির আবেদন শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থেকে বেলা ১১টা থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই প্রক্রিয়া চলবে ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আবেদন শেষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই ও ভর্তি করানো হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী—এবার ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বয়স জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন—২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্মতারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত। পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম-নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল পছন্দক্রম দেওয়া যাবে অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয়ের নাম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম (দুটি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি কোনো স্কুলেই একটি শ্রেণির কোনো শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যেকোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়া ঢাকা মহানগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন সর্বোচ্চ তিনটি থানাকে ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে নির্ধারণ করতে পারবেন। ক্যাচমেন্ট এরিয়া থেকে শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী নেওয়া হবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়ার এ কোটা সুবিধা পেতে অনলাইনে আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্বাচন করতে হবে। ডিজিটাল লটারি ও ফল প্রকাশ আবেদন প্রক্রিয়া শেষে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর লটারির ফল প্রকাশ করা হবে। মাউশির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—আনুষ্ঠানিকভাবে লটারির সম্ভাব্য দিন ঠিক করা হয়েছে ১০ ডিসেম্বর। এরপর ১২ ডিসেম্বর লটারির কার্যক্রম শেষে ফল প্রকাশ করা হতে পারে। তবে বিশেষ কারণে এ তারিখে পরিবর্তন আসতে পারে। মেধা-অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ ও চূড়ান্ত ভর্তি ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশের পর ১৭ ডিসেম্বর শুরু হবে চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম, যা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকার ভর্তি চলবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চূড়ান্ত ভর্তির ফি ও অন্যান্য খরচ দেশের মফস্বল এলাকার স্কুলে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে ৫০০ টাকার বেশি হবে না। উপজেলা ও পৌর এলাকায় ১ হাজার টাকা, মহানগর এলাকায় (ঢাকা বাদে) সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে রাজধানীর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে ৫ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে ৮ হাজার টাকা। তবে ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। তাছাড়া রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনর্ভর্তি ফি নেওয়া যাবে না। সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশই কোটা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশই ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা। তাছাড়া বীর ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ১০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ২ শতাংশ, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাই-বোনরা ৫ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন। তবে এবার কোটা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার জন্যই কেবল ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ কোটায় শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এ আসনে ভর্তি করতে হবে। জানা যায়, প্রতি বছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী লটারিতে অংশ নিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়ে থাকে। সন্তানকে ভালো স্কুলে ভর্তির জন্য চেষ্টা করেন সব অভিভাবক। এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তারা। এবার তারা লটারি পদ্ধতি বাদ দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। সময় স্বল্পতার কারণে অভিভাবকদের দাবি এবার বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব না হলেও আগামীতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com