জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও অসুস্থতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক সরকারের শেখানো কথা বলছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, আজ সোমবার বিএসএমএমইউ’র পরিচালক খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে গিয়ে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া ভালো আছেন, চিকিৎসায় সন্তুষ্ট।’ তিনি হাঁটতে পারেন না, অন্যজনের সহায়তায় তাকে হাঁটতে হয়। তার আরও চিকিৎসা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘বিএসএমএমইউ পরিচালক সরকারের শেখানো কথাই বলছেন। বিএসএমএমইউ’র পরিচালকের বক্তব্যে এটি সুস্পষ্ট যে, ৭৫ বছর বয়সে ভয়ানক অসুস্থ চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাবন্দি রেখে বিনা চিকিৎসায় তিলে তিলে নিঃশেষ করার মহা আয়োজন চলছে। প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে পরিচালকের বক্তব্যে। পরিচালক সাহেবের বক্তব্যের অনেকাংশই এখতিয়ারবহির্ভূত। কারাবন্দি ও ভয়ানক অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রভূত ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী শেখ হাসিনার মতোই পরিচালকের বক্তব্যও অযাচিত, অগ্রহণযোগ্য, অসৌজন্যমূলক, পূর্বকল্পিত, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও কুৎসামূলক।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রাণনাশের দুরভিসন্ধি নিয়েই কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন তার শরীর ভেঙে পড়ছে, স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। উন্নত চিকিৎসার অভাবে তিনি এখন প্রতিনিয়ত চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়ছেন। দেশনেত্রীকে কোনোভাবেই মুক্তি না দিয়ে কারাগারে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নে উন্মত্ততা দেখানো হচ্ছে।
রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা গত শনিবার সন্ধ্যায় আজারবাইজানে স্থানীয় হিলটন হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বলেছেন, ‘বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের ইস্যু বানাতে তাকে অসুস্থ বলছে। খালেদা জিয়া কারাগারে অন্য বন্দিদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন।’ এর আগে শেখ হাসিনা লন্ডনে গিয়ে বলেছিলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সারাজীবন কারাগারে রাখবেন তিনি!’ এসব কথাবার্তায়ই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ মেলে বেগম জিয়াকে বন্দি অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় চিরতরে পঙ্গু করে দিতে চান তিনি।”
তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেত্রীকে রাজনীতি এবং নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে একতরফাভাবে নির্বাচন করার পর এখন তাদের ভয়ের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। এ কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। সুচিকিৎসা না দিয়ে বন্দি রেখে প্রৌঢ় মহীয়সী নারীর ওপর ইতিহাসের বর্বরতম নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দিন। অন্যথায় তার যদি কোনো ক্ষতি হয় তবে সব দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই বহন করতে হবে।’