নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা পেঁয়াজ মজুত করতেছে তারা কত দিন ধরে তা রাখতে পারে, পেঁয়াজ কিন্তু পচেও যায়। বেশি রাখতে গিয়ে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে তাদের লোকসান হবে। লাভ হবে না। এটাও বাস্তবতা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সম্প্রতি আজারবাইজান সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পেঁয়াজের দরজা খুলে দেয়া হলো। সমস্যা থাকবে না, হয়তো সাময়িক। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ চলে আসছে। ১০ হাজার টন মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই চলে আসবে। পেঁয়াজ কিন্তু অলরেডি আছে।
তিনি বলেন, আপনারা পত্রিকায়ই তো বের করেছেন অনেক জায়গায় পেঁয়াজ রয়ে গেছে। কিন্তু কেন তারা বাজারে ছাড়ছে না, সেটা বড় ব্যাপার। আর কিছু না পেয়ে পেঁয়াজ নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ ছাড়াও কিন্তু রান্না হয়। আমি করি তো, আমাদের বাসায় করে। আমরা কিন্তু পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করি। এই পেঁয়াজ নিয়ে এত অস্থির হয়ে পড়ার কী আছে, আমি তো জানি না। হয়তো বেশির জায়গায় একটু কম দিয়ে খেতে হতে পারে এই তো।
তিনি বলেন, বাইরে কিন্তু পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। এই সমস্যা থাকবে না। পেঁয়াজ চলে আসতেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ১০ হাজার টন চলে আসবে, তারপর ৫০ হাজার টন চলে আসবে।
১২০টি উন্নয়নশীল দেশের ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত আজারবাইজান সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর বাকু ‘কংগ্রেস সেন্টার’-এ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী এ ন্যাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অন্য সদস্য দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ন্যাম সম্মেলনে যোগ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রের লাঞ্চন হলে পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রতিনিধিদলের প্রধানদের জন্য দেয়া ওয়ার্কিং লাঞ্চন-এ যোগ দেন।
পরে তিনি বাকু কংগ্রেস সেন্টারে সমসাময়িক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিশ্চিতে ‘বান্দুং নীতিমালা’ সমুন্নত রাখা বিষয়ে এক সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন। সন্ধ্যায় তিনি হায়দার আলিয়েভ সেন্টারে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের দেয়া সরকারি সংবর্ধনায় যোগ দেন। ২৬ অক্টোবর সকালে শেখ হাসিনা বাকু কংগ্রেস সেন্টারের সাধারণ বিতর্কে অংশ নেন। পরে, বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী আজারবাইজানের শহীদদের স্মৃতির সম্মানে নির্মিত স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
তিনি হিলটন বাকুতে একই সঙ্গে আজারবাইজানের দূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দেয়া নৈশভোজে অংশ নেন। ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিইয়েভ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, আলজেরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আবদেলকাদের বেনসালাহ্ ও ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকীসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল হিলটন বাকুতে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তার সফরকালে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আজারবাইজান প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভের উপস্থিতিতে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়।