বিশেষ প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডে নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, এ রহস্য উদঘাটন হবে এবং ষড়যন্ত্রকারীরা ধরা পড়বে। তাদের বিচারও একদিন হবে।
রোববার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী এবং খুনি, এদের সাজা হয়েছে, এদের বিচার হয়েছে। এদের যারা দোসর বা ষড়যন্ত্রকারী, হয়তো আমরা আজকে বিচার করে যেতে পারলাম না, আমরা করার চেষ্টা করব বা আগামীতে যারা আসবে।
তিনি বলেন, ইতিহাস কোনোদিন মুছে ফেলা যায় না। তখন এই ষড়যন্ত্রকারীরাও একসময় ধরা পড়বে। তাদের সে রহস্য উদঘাটন অবশ্যই হবে। কেউ না কেউ এটা করবে, এটা আসবে, এটা হবেই।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নাম যখন মুছে ফেলা হয়েছিল এদেশ থেকে, তখন বলেছিল আর কোনোদিন এ নাম ফিরে আসবে না। কিন্তু তা হয়নি। ২১ বছর পর আবার ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, এইটুকু বলব, জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা বারবার সরকারে এসেছি বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে তাদের রায় কার্যকর করতে পেরেছি, জাতির পিতার হত্যার বিচার করে আমরা কার্যকর করতে পেরেছি, ৩ নভেম্বরের বিচার করে আমরা কার্যকর করেছি। এখনো এখানে-সেখানে যে কয়টা খুনি পালিয়ে আছে আমরা তাদের খোঁজ-খবর করছি। অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দেইনি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের মেরুদণ্ড ও আত্মমর্যাদা আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটা দল, তার চেয়ারপারসন এতিমের অর্থ আত্মসাতে জেলে, আবার ভারপ্রাপ্ত যাকে করল- বাংলাদেশে এত নেতা থাকতে বিএনপির নেতার এতই অভাব হয়ে গেল যে, একজন নেতা পেল না- আরেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং যে পলাতক, তাকে বানাল ভারপ্রাপ্ত, বিএনপির নেতৃত্বের এত অভাব!
তিনি বলেন, আমি জানি না যারা বিএনপি করেন ওনাদের কোনো মেরুদণ্ড আছে কিনা সেটাই আমার সন্দেহ, তাদের কোনো আত্মমর্যাদা বোধ আছে কিনা সেটাই আমার সন্দেহ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য একদিকে অর্থনৈতিকভাবে দেশের উন্নতি করা, দেশের অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়ন, পাশাপাশি দারিদ্র্যের হাত থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিয়ে, ঠিক জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছেন এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, কেন্দ্রীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শিক্ষাবিদ আনিসুল হক, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।