অনলাইন ডেস্ক: পাকিস্তানে এক হিন্দু পরিবারের দুই সহোদরের স্ত্রী একইসঙ্গে আত্মহত্যা করেছে। তারা দুই ভাইয়ের সঙ্গে তাদের কর্মস্থলে বসবাস করতেন। পাকিস্তানের থর এলাকার ইসলামকোট শহরের অদূরের কেহরি গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণীরা কেন একসঙ্গে আত্মহত্যা করলেন এ নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশও দিশেহারা।
গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত রোববার নাথু বাই ও বিরু বাই নামের ওই দুই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। বয়স সম্পর্কে সঠিক কিছু জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে দুজনের আনুমানিক বয়স বিশ বছরের কাছাকাছি। তাদের সহোদর স্বামীরা হলেন চমন কোহলি ও পেহলাজ কোহলি।
আত্মহননকারী দুই গৃহবধূর মধ্যে ভিরু বাইয়ের এক বছর বয়সী একটি শিশু সন্তান আছে। ছয় মাস ধরে তারা গ্রাম থেকে দূরে একত্রে একটি খামারে বসবাস করতেন। রোববার সেখানে দুটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করে মামলার কোনো কূলকিনারা করতে পারছে না।
পুলিশ লাশের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি। থিরু খেঁ নামের এক ধনী ব্যক্তির খামারে নাথু বাই ও ভিরু বাই দিনমজুরের কাজ করতো। স্ত্রী সন্তান নিয়ে গত ছয় মাস ধরে সেখানেই বসবাস করছেন তারা। স্ত্রীর আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তাদের স্বামীদের জিজ্ঞাসা করা হলেও তারা জানান, আত্মহত্যা করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশ বলছে, তারা কোনো কারণই খুঁজে পাচ্ছে না। স্থানীয় থানা-পুলিশের প্রধান পরিদর্শক কবির খান বলেন, ‘আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে এটা আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। তবে আমরা এখনো তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। কেন তারা আত্মহত্যা করেছেন, এটা বলা আসলেই আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন তো ফসল তোলার সময় তাই বলা যাচ্ছে না ক্ষুধার জন্য এটা হয়েছে। অতিরিক্ত কাজের চাপ ও অবহেলায় পারিবারিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’পাকিস্তানের ওই এলাকা দরিদ্র অঞ্চল হলেও অভাবের কারণে এই আত্মহত্যা নয় বলে মত প্রতিবেশীদের।’
মানবাধিকার কর্মীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত থর এলাকায় ৫৯টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৮ জনই নারী। দুটি শিশুও রয়েছে। গত বছর এখানে ১৯৮ জন আত্মহত্যা করে। স্থানীয় কর্মকর্তারাও বলছেন, সম্প্রতি আত্মহত্যা বেড়েছে ওই এলাকায়।