জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকার সাবেক মেয়র, সাবেক মন্ত্রী সাদেক হোসেন খোকাকে সংসদ ভবনসহ পাঁচটি জায়গায় শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে সন্ধ্যায় রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। মা সালেহা খাতুন ও বাবা এম এ করীমের কবরের পাশে শায়িত হলেন তিনি।
দাফনের সময় মরহুমের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খোকার মরদেহ কবরে নামানোর আগে এই গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে পুলিশের ১৭ সদস্যের একটি চৌকস দল ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আবদুল আউয়ালের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। তারা এই মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা স্যালুট জানান। এ সময় পুলিশের এডিসি নাজমুন নাহারসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় নিউইয়র্ক থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খোকার মরদেহ পৌঁছে। সেখানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কফিন গ্রহণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী, মেজর (আব.) কামরুল ইসলাম, আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, কামরুজ্জামান রতন, নাজিমউদ্দিন আলম, তাবিথ আউয়াল, বজলুল বাসিত আনজু, নবী উল্লাহ নবী, এস এম জাহাঙ্গীর, শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খানসহ মহানগর নেতারা।
খোকার মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটে তার স্ত্রী ইসমত হোসেন, ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও ইশফাক হোসেন, মেয়ে সারিকা সাদেক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালামসহ স্বজনরা আসেন।
গত সোমবার (৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাদেক হোসেন খোকা। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের শেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তার মরদেহ সেখানে নেয়া হয়।
সেখানে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে তার মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার, চিত্রনায়ক উজ্জল এবং গণফোরাম ও এলডিপির পক্ষ থেকেও নেতারা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় খোকার মরদেহবাহী গাড়িটি পৌঁছায়)। পরে দক্ষিণ প্লাজায় অস্থায়ীভাবে স্থাপিত মঞ্চে মরদেহের কফিনটি রাখা হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের শেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এই জানাজায় অংশ নেন দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদরা।
বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সাদেক হোসেন খোকা একজন সর্বজন স্বীকৃত রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি আধুনিক ঢাকা গড়তে কাজ করেছিন। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন।
সাদেক হোসেন খোকার দুই ছেলে ইশরাক হোসেন ও ইশফাক হোসেন সংসদ ভবনের জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
জানাজায় অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, ওয়ার্কার্স পাটির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবের হোসেন চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন প্রমুখ।
জানাজা শেষে খোকার মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিরোধী দলের পক্ষে জাপা মহাসচিব মশিউর রহমান, কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুক ইসলাম, মওদুদ আহমদের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টারা।