নিজস্ব প্রতিবেদক: দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগণের দল, বাকিগুলো মিলিটারি ডিকটেটরদের, উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো। কাজেই তাদের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। জনগণের কথা বলার জন্য, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ গড়ে উঠেছিল। সে কথা সব সময় মনে রাখতে হবে। সেভাবে দলের মান সম্মান যাতে থাকে, মানুষের আস্থা বিশ্বাস যাতে অর্জন করা যায় সেভাবে সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত করবেন।
টানা নবমবারের মতো শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যেহেতু আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারে, সেখানেও একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, বেশি দিন সরকারে থাকলে সংগঠন বা সরকারেরও বদনাম হয়। আমরা অন্তত এটুকু বলতে পারি, জনগণের কাছে আমরা আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে পারছি। এটা যেন অব্যাহত থাকে। সেভাবে সকল নেতাকর্মীকে কাজ করতে হবে। কেউ যেন এমন কিছু না করে যার ফলে আমাদের পার্টির বদনাম হয়, সরকারের বদনাম হয়, দেশের বদনাম হয়, সেটি যেন না হয়।
শক্তিশালী সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শক্তিশালী সংগঠন থাকলে পরে যেকোনো কিছু মোকাবিলা করা যায়। আমরা সেটা করতে পারছি।
সম্মেলনে বিভিন্ন পদে পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতার হাতে গড়া এই সংগঠন। আমরা সংগঠনটাকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া আমাদের এখন নেতাকর্মী অনেক। তাই কিছু কিছু পরিবর্তন করতে হয়। একবার একেক জনকে দিয়ে দিয়ে প্রত্যেককে ট্রেনিং করানো দরকার।
মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন দ্রুত আয়োজনের নির্দেশনা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি নেতাকর্মীদের বলেন, যে সম্মেলনগুলো হয়নি সেগুলো খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলতে হবে। আগামীতে সম্মেলনগুলো সময়মতো করতে হবে। আর না করলে সে কমিটিগুলো আমরা ভেঙে দেব। একটা নিয়মের মধ্যে, শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আগামীতে সংগঠনটা যাতে ভালোভাবে চলে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। সংগঠনের সুনাম, ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মলেন করেছি। সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলা দরকার। সেগুলোও করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রচুর উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি। সেটি যেন যার যার এলাকায় ভালোভাবে চলে সেটাও একটু দেখতে হবে। ভালোভাবে যেন কাজগুলো হয়।
আবারও দুর্নীতি-মাদক-জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যে অভিযানটা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক এটা অব্যাহত থাকবে। এটা না করলে আমরা দেশকে উন্নত করতে পারব না।
তিনি বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমাদের লক্ষ্যটাই হলো তার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে বাংলাদেশটা আমরা গড়তে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি। সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই।
সুশৃঙ্খল ও চমৎকারভাবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি যে, সবকিছু ভালোভাবে হয়েছে। সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। কারণ সব সময় একটা টেনশনে থাকতে হয় যে, এতো মানুষ সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে থেকে সবাই এসেছে। তাদের মধ্যে থেকে কখন কোথা থেকে কী হয়, এ জন্য চিন্তিত ছিলাম। যাই হোক আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তারাও খুব ভালো কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, উদ্দেশ্যই ছিল যে সম্মেলনটা এই বছরের মধ্যে শেষ করব। যদিও হঠাৎ ঠান্ডা পড়ে খুবই কষ্ট হয়েছে সকলের। ভাবতে পারিনি যে এতো ঠান্ডা পড়বে। আজকেও সেই ঠান্ডা।
গণভবনে আগত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আপনাদেরই ভবন। আপনাদের বদৌলতেই আমি এখানে এসেছি। না হলে লে এখানে আসা সম্ভবপর ছিল না।