অনলাইন ডেস্ক: মেক্সিকোতে প্রজাপতির সুরক্ষায় নিয়োজিত একজন পরিবেশকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ নিখোঁজ থাকার পর হোমেরা গোমেজ নামের ওই পরিবেশকর্মীকে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মিশোগান থেকে উদ্ধার করা হয়। তিনি একজন কবিও।
২০০৬ সাল থেকে মেক্সিকোতে নিখোঁজ হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের অনেকেই অপরাধী চক্রের হাতে খুন হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। এই চক্রের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই অপহরণ ও হত্যার শিকার হতে হয় সেখানে।
৫০ বছর বয়সী গোমেজও অবৈধভাবে গাছ কাটার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। মিশোগানের ওকাম্পোতে প্রজাপতির অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তার নিখোঁজ হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, নিজ কর্মকাণ্ডের কারণেই টার্গেটে পরিণত হয়ে থাকতে পারেন গোমেজ।
মিশোগানের মানবাধিকার কমিশন বলছে, দুই সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হন গোমেজ। সম্ভবত বনে অবৈধ কাঠুরেদের ধরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের অ্যাটর্নির দফতর থেকে এক সূত্র জানায়, তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। শরীরে নিপীড়নের কোনও চিহ্নও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়। তবে অধিকারকর্মীরা বলছেন, অবৈধ কাঠুরেদের সঙ্গে বিবাদের জেরে তার মৃত্যু হতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে হলুদ-কালো বর্ণের বাহারি প্রজাপতির ছবি প্রকাশ করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন গোমেজ। তাকে সবশেষ দেখা গিয়েছিলো ১৩ জানুয়ারি। এর পরদিনই তার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। স্বজনরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই সংঘবদ্ধ চক্রের কাছ থেকে তিনি হুমকি পেয়ে আসছিলেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকোতে প্রায়ই অধিকার কর্মীদের হুমকি দেওয়া হয়। খুনও হতে হয় অনেককে।
হোমোরো আরিদিজ নামে এক পরিবেশবাদী গোমেজের মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন, যারা পরিবেশ নিয়ে কাজ করে তাদের যদি অপহরণ করে হত্যা করা হয় তবে কে মেক্সিকোর পরিবেশ বাঁচাতে এগিয়ে আসবে?’
শীতকালে কানাডা থেকে লাখ লাখ প্রজাপতি ২ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে মেক্সিকোতে আসে। তারা মিশোগানে আশ্রয় নেয়। বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবেও চিহ্নিত এই অঞ্চল। তবে সম্প্রতি কাঠুরেরা অবৈধভাবে গাছ কাটায় হুমকির মুখে পড়ে সেখানকার প্রজাপতি ও পরিবেশের ভারসাম্য। দীর্ঘদিন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন হোমেরো গোমেজ।