জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : দুঃসময়ের ‘ত্যাগী ও যোগ্য’ নেতাদের বাইরে রেখে সুবিধাবাদীদের দিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনের অভিযোগ এনেছেন সেখানকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে যখন মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলছিল, তখন বাইরে এই অভিযোগে বিক্ষোভ করেন জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হলেও পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সম্মেলন না করেই ঘরে বসে অর্থের বিনিময়ে কমিটির করেছেন তারা।
এ সময় তারা ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিলে সুকুমার রঞ্জন ঘোষ ও তোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকরা বাধা দেয়। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শ্রীনগরের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ‘উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে এবং নিজ বলয় ভারী করতেই ঘরে বসে পকেট কমিটি গঠন করছেন।’
‘যাদেরকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে তারা কেউ দলের দুঃসময়ে ছিলেন না। এখন টাকার বিনিময়ে থানা, ইউনিয়ন, ওর্য়াডের দায়িত্বশীল পদে চলে এসেছেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে এক ধরনের কোন্দল সৃষ্টি করছে।’
গজারিয়া থানার নেতা মুসা আহমেদ বলেন, ‘গজারিয়া থানার কোনো ইউনিয়ন সম্মেলন করেনি। ঘরে বসে টাকার বিনিময় কমিটি করছে গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন থানার সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।’
কোলাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।’
শ্রীনগর উপজেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি হাসান আব্দুল মতিন বলেন, ‘শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে আলোচনা না করে, সম্মেলন না করে টাকা নিয়ে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি করছে।’
এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা বলছেন, দায়িত্বশীল নেতারা ঘরে বসে যেভাবে তৃণমূল কমিটির করছে, তাতে ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতা-কর্মী কেউ কমিটিতে আসতে পারেনি, সবাই বাদ পড়েছেন। আর্থিক সুবিধা দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারীরা দায়িত্বশীল পদে চলে আসছেন। তারা চান এসব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন করে সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে কমিটি করা হোক।