ঢাকা: মিয়ানমার থেকে এসে কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় ৫ কোটি ইউরো সহায়তা দেবে জার্মানি। এই অর্থ কক্সবাজারের স্থানীয়দের সহায়তায়ও কাজে লাগানো হবে। জার্মানির এই সহায়তা আন্তর্জাতিক অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের কল্যাণে ব্যয় করা অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশ-জার্মানি যৌথ পরামর্শ সভায় নতুন এই প্রতিশ্রুতির কথা ঘোষণা করেছেন জার্মানির প্রতিনিধিরা। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জার্মানির পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান ড.ইউটি হিনব্যাস। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্বদেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব ড. গৌরঙ্গচন্দ্র মোহন্ত। ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহলজসহ ইআরডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণেও কারিগরি সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন জার্মানির প্রতিনিধিরা। গত বছর জার্মানি সফরে এ বিষয়ে সহায়তা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তার অনুরোধ আমলে নেয় জার্মানির সরকার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই সহায়তার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এই দুই ইস্যু ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, সুশাসন ও নদ-নদীসহ স্থানীয় সম্পদের ব্যবহারসহ কয়েকটি সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
দিনব্যাপী বৈঠক শেষে জার্মানির প্রতিনিধি জানান,গত মাসের শেষ দিকে জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয় মন্ত্রী ড. গার্ড মুলার বাংলাদেশ সফর করেন। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং রোহিঙ্গা শিবিরে যান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। সফর শেষে বাংলাদেশকে নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন তিনি। এই সহযোগিতার অংশহিসেবে তার সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই অর্থ কক্সবাজারের স্থানীয়দের উন্নয়নেও কাজে লাগানো হবে।
দিনব্যাপী আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সময় সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় হিসেবে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের বক্তব্য চাওয়া হয়। তবে নিজেদের ইস্যুতে আলোচনার জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত গত পরামর্শ সভার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহযোগিতা হিসেবে ২০ কোটি ইউরো অর্থসহায়তা দেয়ার কথা। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে আসছে জার্মানি। এ পর্যন্ত এ ধরনের অর্থসহায়তার পরিমাণ ৩০০ কোটি ইউরো।