নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের জন্য রেলওয়ের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল নয়টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
প্রথমবারের মতো এবার অঞ্চল ভেদে ভিন্ন পাঁচ জায়গায় টিকিট বিক্রি করায় দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে স্টেশন কমলাপুরে চিরচেনা রূপ নেই। এবার কমলাপুরে টিকিট কিনতে এসেছেন শুধু রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের যাত্রীরা।
কমলাপুর ছাড়াও সকাল নয়টা থেকে রাজধানীর আরও চারটি স্টেশন থেকে সারাদেশের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ দেয়া হচ্ছে ৩১ মের ট্রেনের টিকিট। একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে।
ঈদযাত্রায় ট্রেনের আগাম টিকিট পেতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীরা ভিড় করতে থাকেন। ভোর হতে না হতেই সেই লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। সকাল ছয়টার দিকে লাইন স্টেশন ছাড়িয়ে যায়।
কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। কাউন্টারের সামনে বসেই অনেকে সেহরি খেয়েছেন। টিকিট পাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে যারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন তাদের অনেকেও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাচ্ছেন। সকালের দিকে আসা অধিকাংশ লোকই টিকিট পাবেন বলে আশা করছেন।
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন রফিক। রাজশাহীতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে যাওয়ার জন্য টিকিট কিনতে এসেছেন তিনি। মহাসড়কে যানজট এড়াতে ট্রেনে করেই রাজশাহী যাওয়ার টিকিট নিতে এসেছেন তিনি। টিকিট নামের সোনার হরিণ পাওয়ার পর তিনি জানান, প্রথম দিনের হলেও টিকিট পাব কি না তা নিয়ে সংশয়ে ছিলাম। সকাল সকালেই টিকিট পেয়ে ভালোই লাগছে।
রফিক বলেন, ‘টিকিটের জন্য গতকাল সন্ধ্যার পরই লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। যাক এখন নিশ্চিত বাড়ি যেতে আর ঝামেলা পোহাতে হবে না। টিকিট হাতে পাওয়ার পর আর কষ্ট মনে নেই। টিকিট হাতে পেয়ে প্রচণ্ড আনন্দ লাগছে।’
ভিড় কমাতে এবার রাজধানীর আরও চারটি স্টেশন থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছে রেলওয়ে। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটে বিক্রি করা হচ্ছে টিকিট। বাড়তি চাপ সামাল দিতে স্টেশনে বসানো হয়েছে র্যাব-পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প।
টিকিট বিক্রিতে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম ঠেকাতে মাঠে মনিটরিং টিম ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
দুর্ভোগ কমাতে এবারই প্রথমবারের মতো রাজধানীর পাঁচ স্থানে বিক্রি করা হবে ঈদের টিকিট। ওই পাঁচ জায়গায় পর্যাপ্ত বুথ ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এই পাঁচটি স্টেশনের মধ্যে কমলাপুর স্টেশন থেকে থেকে যমুনা সেতু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলগামী সবকটি ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে দেয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট। তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন, বনানী স্টেশন থেকে নেত্রকোণাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলভবন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেয়া হবে ১ জুনের টিকিট। শুক্রবার ২ জুনের, ২৫ মে ৩ জুনের এবং ২৬ মে ৪ জুনের টিকিট দেয়া হবে।
অন্যদিকে ফেরত যাত্রীদের জন্য ২৯ মে দেয়া হবে ৭ জুনের টিকিট, একইভাবে ৩০ ও ৩১ মে এবং ১ ও ২ জুন দেয়া হবে যথাক্রমে ৮, ৯, ১০ ও ১১ জুনের টিকিট।