নীলফামারী প্রতিনিধি: ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। তিস্তা ব্যারাজের গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নুরুল ইসলাম শুক্রবার (২৬ জুন) সকালে জানান, সারা রাতের বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সকাল ৬টায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৯টায় তা কমে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সতর্কীকরণ কেন্দ্র ও স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ব্যারাজের পার্শ্ববর্তী এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ডিমলা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাশাপশি স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত চড়খড়িবাড়ী এলাকার একটি ক্রস বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) আমিনুর রশিদ জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ব্যারাজের সব গেট খুলে রাখায় ভাটি এলাকার খালিশা চাঁপনী ও বাইশপুকুর চর প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের মাছের খামার জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছে। আবার অনেকেই গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি উঁচু জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় ১০টি চর ও চর গ্রামের ৮ হাজার বাড়িতে পানি প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টয় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। শুক্রবার সকালে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হছে। প্রসঙ্গত, ২০ জুন সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। শুক্রবার সকালেও ফের বিপদসীমা অতিক্রম করেছে পানি।