নিউজ ডেস্ক : খাওয়া-দাওয়াই অনিয়মসহ তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার কারণে অত্যাধিক গ্যাস জমে পেট ফেঁপে বা ফুলে ওঠে। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া হলে এবং হজমে সমস্যা হলে পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হয় যার কারণেই পেট ফেঁপে থাকে।
এর ফলে শুরু হয় বদহজম। কখনো কখনো পেটে ব্যথাও থাকতে পারে। এই পেট ভোলা ভাব ও বদহজম থেকে শুরু হয় কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাতলা পায়খানা। এই সমস্যার নিরাময়ে ওষুধ না খেয়ে শুরুতেই ঘরোয়া কিছু সমাধান গ্রহণ করলেই সমাধান মিলবে। জেনে নিন উপায়-
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি দ্রুত খাবারকে হজম করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন; তাদের উচিত পচুর পানি পান করা।
পেটে ফোলাভাব ও অস্বস্তি হলে কখনো শুয়ে থাকবেন না। বরং কয়েক ঘণ্টা বসে, দাঁড়িয়ে বা হাঁটাহাঁটির মধ্যে থাকুন। শুয়ে থাকলে পেটের অস্বস্তি আরও বাড়বে।
হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। দেখবেন ভালো লাগবে। এ ছাড়াও হিটিং ব্যাগের সাহায্যে পেটে তাপ প্রয়োগ করুন অন্তত ২০ মিনিটের জন্য।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এক চিমটি বেকিং সোডা ও লেবুর রস এ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে বদহজমের সমস্যা থেকে দ্রুত মেলে। এই মিশ্রণ কার্বনিক অ্যাসিড উত্পাদন করে, যা গ্যাস এবং বদহজম হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। সেইসঙ্গে এটি লিভারের ক্ষরণ এবং অন্ত্রের গতিশীলতাও উন্নত করতে পারে।
হজমের সমস্যার দ্রুত সমাধানে আছে আদায়। আর বদহজম দূর হয়ে গেলে আপনাআপনিই পেটে ফাঁপার সমস্যা কমে যায়। প্রতিদিন খাবার পর এক টুকরা আদা চিবিয়ে খেলে পেটে আর গ্যাসের সম্যসা করবে না।
পেট ফাঁপলে আদা কুচি করে সামান্য লবণ মাখিয়ে খেয়ে নিতে পারেন অথবা আদা ছেঁচে লবণ দিয়ে আদার রস পান করে নিতে পারেন। এছাড়াও আদা চা তৈরি করে পান করুন সকাল বিকাল। এতে করে পেট ফাঁপা অনেকটা উপশম হয়ে যাবে।
শসা খেলে পেট ঠাণ্ডা থাকে। এতে থাকে ফ্লেভোনয়েড ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায়।
টকদই অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। এর ফলে ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক উন্নত হয় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে পেট ফাঁপা ও বদহজমের সমস্যা কমে।
পেঁপেও বদহজম থেকে রক্ষা করে। এতে থাকে পাপায়া নামক এনজাইম, যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে দ্রুত পেট ফাঁপার সমস্যার সমাধান হবে। যদি কাঁচা খেতে না পারেন; তাহলে আদার মতো হলুদ ছেঁচে নিয়ে পানিতে জ্বাল দিয়ে চা তৈরি করে পান করে নিন।
হজমের জন্য খুবই ভালো এই মসলাটি। এক গ্লাস পানিতে আধা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো বা আস্ত দারুচিনি ফুটিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে গ্যাস দূরে থাকবে।
জিরা পেটের গ্যাস নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক কাজ করে। পাকস্থলীর এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে পেটের ব্যথা দূর করতে এবং হজমক্রিয়া উন্নত করে জিরায় থাকা পুষ্টিগুণ। এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুঁড়ো মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
তুলসিতে এমন পদার্থ আছে, যা গ্যাসের সমস্যা কমাতে পারে। এ ছাড়াও ক্ষুধা বাড়ায়, পেটে ব্যথা, অস্বস্তি, ফোলাভাব কমায় এবং সামগ্রিক হজমে উন্নতি করে। তুলসিতে থাকে ইউজেনল। যা পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ হ্রাস করতে পারে।
ডাবের পানিতে উচ্চ মাত্রায় পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এই পানি রিহাইড্রেটিংয়ের জন্যও বেশ কার্যকর এবং বেশিরভাগ স্পোর্টস ড্রিঙ্কের চেয়ে এটি সবচেয়ে ভালো বিকল্প। কারণ এতে ক্যালোরি ও চিনির পরিমাণ কম। প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা পরপর ২ গ্লাস করে ডাবের পানি খেলে পেট ফাঁপার সমস্যার সমাধান হবে।
কলায় থাকে ভিটামিন বি-৬, পটাসিয়াম, এবং ফোলেট। এই পুষ্টি উপাদানগুলো পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও বদহজমের ফলে হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া উপশম করে কলা।
সূত্র: মেডেকেল নিউজ টুডে