গাজীপুরের টঙ্গীতে পৃথক স্থানে গোসলের ভিডিও ধারন করে তা প্রকাশ করার ভয়ভীতি দেখিয়ে এক সন্তানের জননীকে (২২) ও বিয়ের আশ্বাসে এক গার্মেন্টস কর্মীকে (২০) ধর্ষণের অভিযোগে টঙ্গী পূর্ব থানায় পৃথক ৩টি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগিরা। এছাড়াও এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে শালিকাকে (৪০) ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ মামলা হয়েছে।
স্থানীয় পাগাড় পাঠানপাড়া, পূর্ব আরিচপুর মধুমিতা বেলতলা মসজিদ ও এরশাদনগর এলাকায় এসব ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় একই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই সহোদর ভাই, গার্মেন্টস কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবক ও শালিকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ অভিযুক্ত ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, টঙ্গী পাগাড় পাঠান পাড়া এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২৫), তার ছোট ভাই জান্নাতুল ফেরদৌস (২২), গার্মেন্টসকর্মী ধর্ষণের দায়ে পূর্ব আরিচপুর মধুমিতা বেলতলা বস্তির মৃত আ. রশিদের ছেলে সিয়াদ (২৪) এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ (৪৮)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগি গৃহবধুর স্বামী পাগাড় এলাকার একটি কারখানায় চাকুরি করে। এ সুবাদে তারা স্বাম্-ীস্ত্রী একই এলাকায় অভিযুক্ত দুই সহোদরের মামা জহিরুলের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। স্বামী কর্মস্থলে চলে গেলে গত ২৫ মে বিকেল ৩টার দিকে অভিযুক্ত জাহিদুল ওই গৃহবধুর গোসলের ভিডিও ধারন করেছে বলে ভয় দেখিয়ে তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ইতিপূর্বেও একই জায়গায় গৃহবধুকে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে বখাটে জাহিদুল। এদিকে, ছোট ভাই জান্নাতুল ফেরদৌস জাহিদুল ইসলামের সাথে গৃহবধুর শারীরিক মেলামেশা দেখেছে বলে গৃহবধুকে জানায়। পরে উক্ত ঘটনার বিষয়ে তার স্বামীকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি ও ভয়ভীকি দেখিয়ে গত ৩১ মে রাত ৯ টার দিকে গৃহবধুকে তার বাসায় ধর্ষণ করে জান্নাতুল ফেরদৌস।
অপরদিকে, স্বামীর মৃত্যুর পর ভুক্তভোগি এক নারী তিন বছরের কন্যা সন্তানসহ পূর্ব আরিচপুর মধুমিতা বেলতলা মসজিদ এলাকার খোকনের বাড়ির ভাড়া বাসায় থাকে। এ সুবাদে সে স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করে। একই এলাকায় বসবাসের এক পর্যায়ে অভিযুক্ত সিয়াদের সাথে ওই যুবতীর পরিচয়ের সূত্রে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে গত ১ জুন রাত ১১ টার দিকে ওই যুবতীকে পূর্ব আরিচপুর মধুমিতা বেলতলা বস্তি এলাকায় অভিযুক্ত সিয়াদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে সে। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে যুবতীকেকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শণ করা হয়।
এছাড়াও, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ডের এরশাদনগর এলাকার বর্তমান কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ। তার স্ত্রীর খালাতো বোন একই এলাকার ৬ নং বøকে থাকেন। তিনি মহিলা শ্রমিক লীগ টঙ্গী আ লিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ৪৯ নং ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহবায়ক। গত ২৩ মে সকাল ১০টায় তার শালিকাকে বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় কাউন্সিলর ফারুক।
এসব ঘটনায় ভুক্তভোগিরা বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেন। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত কাউন্সিলরসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেন পুলিশ। যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, এসব ঘটনায় পৃথক পৃথক ৪টি মামলা হয়েছে। নির্যাতিতাদের ডাক্তারী পরিক্ষার জন্য হাসপাতালে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।