সীমান্তবর্তী রুশ প্রদেশ রোস্তভের নোভোশাখতিনস্ক শহরের একটি তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮ টা ৪০ ও ৯ টা ২০ মিনিটে পর পর দুটি ড্রোন ওই তেল শোধনাগারে আঘাত হানে বলে জানিয়েছে ওই শোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
নোভোশাখতিনস্ক শহরের ওই শোধনাগারটি রোস্তভের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল শোধনাগার। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে শোধনাগারটির দূরত্ব মাত্র আট কিলোমিটার।
ড্রোন হামলার পরপরই কারখানার বিভিন্ন অংশে আগুন ধরে যায়, সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক স্থির চিত্র ও ভিডিতে দেখা গেছে আগুন থেকে উপরের দিকে পাকিয়ে উঠছে বিশাল কালো ধোঁয়ার কুন্ডলি।
তবে হামলায় শোধানগার কর্মীদের কেউ হতাহত হননি বলে জানিয়েছে শোধনারগার কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, আগুন ধরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তেল শোধন কার্যক্রম বন্ধ করে কর্মীদের নিরপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার তৎপরতা শুরু হয়।
এক বিবৃতিতে তেল শোধনাগার কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘আমরা মনে করছি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে পশ্চিম সীমান্ত থেকে এই হামলা চলানো হয়েছে। আমাদের কোনো কর্মী হতাহত হয়নি এবং নিরাপত্তার স্বার্থে বর্তমানে কারখানার যাবতীয় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
রোস্তভ প্রদেশের গভর্নর ভাসিলি গোলুবেভও এক বিবৃতিতে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নোভোশাখতিনস্কের এই তেল শোধনাগারটি চালু হয় ২০০৯ সালে। রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই কারখানাটিতে প্রতি বছর ৭৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল শোধন করা হয়।
রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্য এক বিবৃতিতে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, এই হামলার কারণে দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাসোলিন ও ডিজেল সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বুধবার ১১৮তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে। বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের সেভারদনেতস্ক শহরে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ বাহিনীর। এর মধ্যে অবশ্য এবাধিকবার সীমান্তবর্তী রুশ তেল শোধনাগার ও তেলে ডিপোতে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন।
সূত্র: রয়টার্স