নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইল বাড়ি আমতলা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মাদকাসক্ত এক সন্তানের অত্যাচার ও নির্যাতনের কারণে ১২ দিন ধরে বাড়িছাড়া অবস্থায় দিনযাপন করছেন বৃদ্ধ মা-বাবা।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ঐ বৃদ্ধ মা-বাবা বাড়িতে গেলে মাদকাসক্ত সন্তান তাদের মারধর করে। এ অবস্থায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মাদকাসক্ত ছেলে হামিদুলের (২৮) বিরুদ্ধে স্থানীয় কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার বাবা আব্দুল করিম (৭৫)।
মাদকের জন্য বাবার কাছে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় হামিদুল বৃদ্ধ বাবা ও মাকে চড়-থাপ্পড়সহ বাড়িঘরে ব্যাপক ভাংচুর করে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন আব্দুল করিম।
নির্যাতনের শিকার বাবা জানান, হামিদুল মদ, গাঁজা ও ইয়াবা সেবনকারী। সে মাদকাসক্ত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়। তার মারধরসহ নির্যাতনের কারণে বৃদ্ধ স্ত্রী রিনা আক্তারকে (৬০) নিয়ে ১২ দিন ধরে নিজের বাড়িতে থাকতে পারছি না।
তিনি বলেন, নেশার টাকা না পেলেই সে আমাদের মারধর করে। তার ভয়ে আমরা অন্যদের বাড়িতে থাকছি। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে গেলে টাকার জন্য আমাদেরকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তাই ইউএনও এবং ওসির কাছে লিখিত নালিশ করেছি যেন অন্তত ৬ মাস হামিদুলকে জেলে থাকতে হয়।
মা রিনা আক্তার বলেন, হামিদুল তার বাবার চেয়ে আমাকে বেশি মারধর করে। আমাদের ৩ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে শফিকুল গাছ থেকে পড়ে ২ হাত ভেঙে এখন পঙ্গু। মেঝো ছেলে রফিকুল সাধারণ কাজ করে তার সংসার চালায়। ছোট ছেলে হামিদুলকে বিয়ে করিয়েছি। তার স্ত্রী সন্তান আছে। কয়েক বছর ধরে হামিদুল মাদকাসক্ত হয়ে আমাদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। আমরা অতিষ্ঠ হয়ে অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান আকন্দ বলেন, আব্দুল করিমের অভিযোগ সত্য। হামিদুল নেশা করে। সে মাসকা ইউনিয়নে বিয়ে করেছে। তার স্ত্রীকেও মারধর করার অভিযোগে মাসকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বাঙালি আমার কাছে তার নামে অভিযোগ করেছিল। তার বাড়ির লোকদেরকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারাও ব্যর্থ হয়েছেন।
কেন্দুয়া থানার ওসি মো. আলী হোসেন পিপিএম বলেন, এসআই সুমনকে বিষয়টির দায়িত্ব দিয়েছি। এ ঘটনায় সে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে কথা হলে ইউএনও মাহমুদা বেগম বলেন, এ জন্য থানায় নিয়মিত মামলা করতে হবে। তবে বিষয়টি আমিও খোঁজ নিয়ে দেখবো।