ইতালির পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে ভোট গণনা। আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা হতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে বুথফেরত জরিপে জয় পেয়েছে ডানপন্থি জোট।
বিবিসি বলছে, জয় নিশ্চিত হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালির সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার গঠন করবেন জোট নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তার সরকার রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বুথফেরত জরিপ বলছে, রোববারের (২৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচনে ৪১ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোটে জয়ী হওয়ার পথে মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টির নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি জোট। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থি প্রার্থী এনরিকো লেট্টার চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন। বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টি ১৮.৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কট্টর রক্ষণশীল ব্রাদার্স অব ইতালি মোট ভোটের ২২ থেকে ২৬ শতাংশ পেতে পারে। এছাড়া জোটের অংশীদার মাত্তিও সালভিনির দল পেতে পারে ৮.৫ থেকে ১২.৫ শতাংশ ভোট। আর সিলভিও বারলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়া পেতে পারে ৬ থেকে ৮ শতাংশ ভোট।
এর মধ্য দিয়ে ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনির ঘনিষ্ঠ রাজনীতিক ৪৫ বছর বয়সী মেলোনি। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিনের শুরুতেই নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেলোনির দল মাত্র কয়েক বছরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ২০১৮ সালেও তার দল মাত্র ৪.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে স্থানীয় সময় রাত ১১টা পর্যন্ত।
বিবিসির প্রতিবেদনমতে, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ কোটি ভোটার ভোট দেয়ার উপযুক্ত ছিলেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোট পড়েছে ৬৩.৮২ শতাংশ। এটা আগেরবার অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে ১০ শতাংশ কম।
মাত্র ১০ বছর আগে ২০১২ সালে ব্রাদার্স অব ইতালি দলটি প্রতিষ্ঠা করেন জর্জিয়া। এর আগে তিনি সিলভিও বারলুসকোনির সরকারে সবচেয়ে কম বয়সে মন্ত্রী হন।
তরুণ বয়সে ইতালির নব্য নাৎসিবাদী আন্দোলনের যুব শাখায় যোগ দেন জর্জিয়া। ফ্যাসিস্ট শাসক বেনিতো মুসোলিনির সমর্থকরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিল। গত বছর তিনি নিজের এক বইয়ে দাবি করেন, তিনি ফ্যাসিস্ট নন। তবে নিজেকে তিনি মুসোলিনির উত্তরসূরিদের সঙ্গেই চিহ্নিত করেছেন। তিনি ইতালিতে মুসলিম অভিবাসীদের আগমনের বিরুদ্ধে।
ব্রাদার্স অব ইতালি দলের সঙ্গে নব্য নাৎসিবাদীদের সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করা হয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, মেলোনি তা সমর্থন করেন। একই সঙ্গে ইউরোপের ব্যাপারে তার কড়া কথাবার্তা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমিয়েছেন তিনি।