রাজশাহীর বাগমারায় ভুয়া এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে মানুষ। অনুমোদনহীন এসব এনজিও গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে গেলে মামলা, হামলা, জমার কাগজপত্র আটকে রাখাসহ নানা হয়রানির শিকার হন অভিযোগকারীরা। এসব সমিতির উদ্যোক্তারা প্রভাবশালী হওয়ায় অসহায় ভুক্তভোগীরা।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর গ্রামের আশরাফুলের অভিযোগ, চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্প জমা দিয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন ঋণ। পরে সমুদয় পাওনা পরিশোধ করেও ফেরত পাননি জমা দেয়া চেকসহ কাগজপত্র। এ নিয়ে তিনি মামলা করলে প্রভাবশালী দাদন ব্যবসায়ীরা উল্টো তার ও স্বজনদের বিরুদ্ধে পাল্টা ৫টি মামলা করেন।
ঋণগ্রহীতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, দাদন ব্যবসায়ীরা সমিতি চালায়; কিন্তু কোনো লাইসেন্স নেই। ওরা শুধু সুদ নেয়। টাকা ফেরত দিলেও জমা দেয়া চেকসহ কাগজপত্র ফেরত দেয় না।
শুধু আশরাফুল নয়, প্রতিটি উপজেলায় তার মতো অনেকেই ভুয়া এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। অনুমোদনহীন কথিত এনজিওর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে গেলে মামলা, হামলা, জমা করা কাগজপত্র আটকে রাখাসহ নানা হয়রানির স্বীকার হন তারা। অনেক ভুয়া এনজিও রাতারাতি গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
কোটি কোটি টাকার ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনা করলেও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি নামে বেনামি পরিচালিত সমিতিগুলো। আবার অনেকে সময় সংবাদের ক্যামেরা দেখে সটকে পড়েন।
বাগমারার পান উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, পান উৎপাদনকারী সমবায় সমিতিটি প্রস্তাবিত; তবে আমরা কেউ বসতে পারি না।
রাজশাহীর কানপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক বলেন, আমার দাদন ব্যবসা করার তো কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমি পেশায় শিক্ষক; সেটাই করি।
রাজশাহী সমাজসেবা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ড. আব্দুল্লা আল ফিরোজ বলেন, অনুমোদনহীন এনজিওগুলো সবার সমন্বিত প্রয়াসে বন্ধে দরকার।
সমাজসেবা অধিদফতরে তথ্য অনুযায়ী, জেলায় নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক হাজার ১৮০টি। এর মধ্যে ৭৬৭টি এনজিও এখন সক্রিয় আছে।