মানবাধিকারের জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করলো বাংলাদেশ। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ইউএনএইচআরসি সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে আবারো সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। ১১ অক্টোবর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে এশিয়ার প্যাসিফিক অঞ্চলের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএন এইচআরসি) মানবাধিকারের সর্বজনীন মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করে এবং সেই অনুযায়ী সর্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনা, দেশভিত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তথ্য অনুসন্ধান সংস্থা নিয়োগের মত উদ্যোগ গ্রহণ করে; প্রতিটি সদস্যপদ রাষ্ট্র অন্যান্য দেশগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানায়। এই সদস্যপদ নির্বাচিত হয় অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ভোটের মাধ্যমে,যেখানে কিছু কঠোর মানদন্ড বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হলো- মানবাধিকার সমুন্নত রাখা,সমুন্নত রাখতে প্রার্থী রাষ্ট্রের প্রচেষ্টা,প্রতিশ্রুতি এবং এটি পূরণে রাষ্ট্রটির সর্বাত্মক সহযোগিতা।
বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য। মানবাধিকার কে সমুন্নত রাখার জন্য বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এই অঙ্গীকার রক্ষায় দায়িত্ব বাংলাদেশ নিষ্ঠার সাথে পালন করে আসছে বাংলাদেশ ২০০৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পাঁচবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকারের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং প্রতিশ্রুতির প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি এবং আস্থার বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে,যা দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য দেশগুলো তুলনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক পাশাপাশি ধর্মীয় সহনশীলতা,লিঙ্গ সমতা ও শিক্ষা উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হয়েছে।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনকে ঘিরে দেশে-বিদেশের কিছু মহলের সাম্প্রতিক অভিযোগ রয়েছে যেগুলোর অধিকাংশই বিতর্কিত; যা ইতিমধ্যে জনপরিসরে বিভ্রান্তি ও বিভাজন তৈরি করেছে। যদিও অভিযোগগুলি এখনো তদন্তাধীন এবং সেগুলো পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়নি, কিন্তু জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের এই বিজয় মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অগ্রগতির একটি স্পষ্ট প্রমাণ। বাংলাদেশ তার জন্মলগ্ন থেকে নিজেকে মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে প্রমাণ করে আসছে। মানবাধিকার বিষয়ক বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থার এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রেক্ষাপট উন্নয়নের চলমান প্রচেষ্টাকে আরো পুনরুজ্জীবিত করবে।