স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন রাকিবুল হাসান সুমন ও ছামিনা খাতুন ওরফে সাবিনা। তবে সম্পর্কে ছন্দপতন ঘটায় শারীরিক সম্পর্কের সময় প্রেমিকাকে হত্যা করেন রাকিবুল। ঘটনার ছয়দিনের মাথায় এ হত্যায় জড়িত রাকিবুলসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- টাঙ্গাইলের গোপালপুরের নববগ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মো. ফরিুক হোসেন (২৪), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের চৌবাড়ির শাহ আলম আকনের ছেলে শারিয়ার আকন্দ (১৯) ও শেরপুরের নকলার মাওড়ার মর্তুজ আলীর ছেলে রাকিবুল হাসান সুমন (৩৪)।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুরের এসপি মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, নিহত সাবিনা (৩২) কুড়িগ্রামের উলিপুর থানার দাড়ারপাড়ের আয়নাল হকের মেয়ে। ১২ বছর আগে তার সঙ্গে নেত্রকোনার পূর্বধলার চাকরোকোনার মোজাম্মেল হকের (৩৬) বিয়ে হয়। সংসারে অশান্তি থাকায় দুই বছর আগে বিচ্ছেদ হয় তার।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর এ.কে.এম রেজাউল করিম বলেন, রাকিবুলের সঙ্গে দুই বছর আগে পরিচয় হয় সাবিনার। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক। দুইজন সাইনবোর্ড এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। একপর্যায়ে সাবিনাকে ছেড়ে স্ত্রী ও সন্তানের কাছে চলে যান রাকিবুল। কারণ, সাবিনা প্রায় সময় রাকিবুলকে বিয়ের চাপ দিতেন। বিয়েতে রাজি না থাকায় রাকিবুলকে স্থানীয়দের মাধ্যমে পেটান সাবিনা।
তিনি আরো বলেন, পেটানোর জেরে পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৩ অক্টোবর সাবিনাকে বন্ধু নাঈমের ভাড়া বাসায় ডেকে আনেন রাকিবুল। তারপর শুরু করেন শারীরিক সম্পর্ক। শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে সাবিনার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রাকিবুল। পরে স্থানীয় ফার্নিচারের দোকান থেকে ১২ হাজার টাকায় কিস্তিতে একটি ওয়্যারড্রব কেনেন তিনি। সাবিনার হাত-পা বাঁধা মরদেহ ওয়্যারড্রবের ভেতরে রাখা হয়। পরে মরদেহ সরাতে নাঈম তার ভায়রা ভাই ফারুক হোসেনকে পিকআপসহ আসতে বলেন। মরদেহ সরানোর সহযোগিতার জন্য শাহরিয়ার আকন্দকেও ডেকে আনেন রাকিবুল ও নাঈম। পরে ওয়্যারড্রোব পিকআপে উঠিয়ে গাজীপুরের বি.কে বাড়ির রাস্তার পাশে সেটিকে ফেলে আসে তারা।
পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, খবর পেয়ে গত ১৪ অক্টোবর গাজীপুরের জয়দেবপুরের বি.কে বাড়ি এলাকায় পরিত্যক্ত ওয়্যারড্রোব থেকে সাবিনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ভাই জসিম উদ্দিন অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। আসামিদের শনাক্তের পর ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।