শনিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ‘ষষ্ঠ সমাবর্তন-২০২৩’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ইদানীং পত্রিকা খুললেই দেখা যায়- বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজির নেতিবাচক খবর। দখলবাজি আর চাঁদাবাজির কারণে ছাত্ররাজনীতিকে এখন আর মানুষ আগের মতো সম্মানের চোখে না দেখে নেতিবাচকভাবে দেখে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজেদের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে রাখবেন। দলীয় লেজুড়বৃত্তির ঊর্ধ্বে গিয়ে রাজনীতি করবেন। পড়াশোনার জায়গা ঠিক রেখে রাজনীতি, সমাজসেবা, বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হবেন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই আপস করা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, উপাচার্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন। তারা রাজনীতির অনুশীলন এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণও করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতি প্রত্যাশিত।
আবদুল হামিদ বলেন, শুধু সনদসর্বস্ব শিক্ষা দিয়ে দেশ ও দশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে বাস্তব জীবনের যোগসূত্র স্থাপন করতে পারলেই সে শিক্ষা সফল হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, উপাচার্য ও শিক্ষকদের মনে রাখতে হবে শিক্ষাদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মূল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আর শিক্ষার্থীদের মূল কাজ লেখাপড়া ও জ্ঞান অর্জন। শুধু প্রতিষ্ঠান ও প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণ নয়, শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষ সাধনেও পদক্ষেপ নিতে হবে। তরুণ সমাজকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে নিরন্তর গবেষণা।
গ্র্যাজুয়েট ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখতে হবে। একক নয়, পরিবার, সমাজ ও জাতীয় উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে গ্র্যাজুয়েটরা মেধাশক্তি ও মানবিকতা দিয়ে কাজ করবেন।
দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনে মেধাবী তরুণদের যথাযথ পরিচর্যার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে হবে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এবারের সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী ১৫ হাজার ২১৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে তিন ক্যাটাগরিতে ১৬ জনকে স্বর্ণপদক দেন রাষ্ট্রপতি।