শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::

বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে বঙ্গমাতার নাম: মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩
  • ৮৯ বার পঠিত

১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক এবং মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এই মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা লাভ করে। বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর এই আজীবন লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী ছিলেন তার সহধর্মিনী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফূরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সন্তান শেখ মুজিব দীর্ঘ আপসহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হয়ে ওঠেননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। তার পেছনে থেকে সব ধরনের সাহস যুগিয়েছেন, সহযোগিতার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তার সহধর্মিনী, এই মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে দীর্ঘকাল তার পাশে থেকে মানবকল্যাণ ও রাজনীতির যে শিক্ষা তিনি লাভ করেছেন, তাতে তিনি একজন বিদুষী ও প্রজ্ঞাবান মানুষে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বার বার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি ছিলেন তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার কাছে ছুটে আসতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ভেঙে না পড়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলার জনগণ তাকে “বঙ্গমাতা” উপাধিতে ভূষিত করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেবল জাতির পিতার সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে তিনি নেপথ্য কারিগর। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছোটবেলা থেকেই ছিলেন দৃঢ়চেতা। যে-কোনো পরিস্থিতি তিনি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য ও সাহস নিয়ে মোকাবিলা করতেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী হওয়ায় পর তার জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সেই কঠিন সময়গুলো স্বামীর পাশে থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। পরিবারের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা, দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাকে করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। তারই পরামর্শে বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত অলিখিত এ ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বাঙালির অহংকার, নারী সমাজের প্রেরণার উৎস।
এদেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তার ফল হিসেবে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তার অনন্য ও অসাধারণ ভূমিকার জন্য তিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই মহীয়সী নারী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সপরিবারে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। জাতির ইতিহাসে সে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তার রেখে যাওয়া আদর্শ সবসময় আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
লেখক: পরিচালক, বিজিএমইএ; শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ; চেয়ারম্যান, নিপা গ্রুপ ও কেসি ফাউন্ডেশন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com