কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়ক লাগোয়া কটিয়াদী উপজেলার চরিয়াকোণা কমরভোগ গ্রাম। সেখানে তিন বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে ফসলি জমিতে হালচাষ করেন মেনু মিয়া। মেনু মিয়ার নেই নিজস্ব জমি, অন্যের জমিতে হালচাষ করে পাওয়া টাকায় চলে তার সংসার। এতে তার সংসারে সচ্ছলতাও ফিরেছে। ঘোড়া দিয়ে হালচাষের ব্যতিক্রমি এই উদ্যোগ এলাকার আলোচিত ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার সদরের কামারকোণা গ্রামের বাসিন্দা মেনু মিয়া। মা, স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে নিয় তার সংসার। নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গাচাষ করে চলছিল তাদের সংসার। তবে অভাব-অনটন ছিল তার নিত্যসঙ্গী।
অন্যদিকে, বাজারে হালচাষের গরুর দাম বেশি হওয়ায় কেনার সামর্থ্যও ছিল না। তাই তিন বছর আগে দুইটি ঘোড়া কেনেন ৪৪ হাজার টাকায়, শুরু করেন অন্যের জমিতে চুক্তিতে হালচাষ। দিনে পাঁচ থেকে ছয় বিঘা জমি হালচাষ করেন। প্রতি বিঘা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় হালচাষ করে দিনে আয় করেন দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা।
চরিয়াকোণা গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন জানান, এখন আগের মতো গরুর হাল নেই। পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করলে জমি সমান হয় না, খরচও বেশি। ঘোড়া দিয়ে চাষ দিলে জমি সমান হয়, আগাছা থাকে না। এতে জমিতে পানি ধরে রাখা সহজ। এজন্য কম খরচে মেনু মিয়ার ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করছি।
মেনু মিয়া বলেন, ঘোড়া দিয়ে জমিতে সুন্দরভাবে হাল ও মই দেওয়া যায়। এক বিঘা জমি চাষ করে ৪০০ থেকে ৫০০ পাই। প্রতিদিন ঘোড়ার ৩০০ টাকার খাবার লাগে। সংসার খরচ চালিয়ে এখন ভালো আছি।
কটিয়াদীর উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. মঈনুল ইসলাম জানান, ঘোড়া দিয়ে হালচাষে মেনু মিয়ার জীবিকা নির্বাহের পথ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটি একটি অপ্রচলিত পদ্ধতি। কৃষি বিভাগ সব সময় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য পরামর্শ দেয়।