বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মঞ্চে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল। একদিকে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, অন্যদিকে দুইবারের শিরোপাজয়ী ভারত। আসরে দুই ম্যাচ হারা অজিদের প্রতিপক্ষ অপরাজিত টিম ইন্ডিয়া। এমন এক ম্যাচে ফেভারিট ছিল রোহিত-কোহলিরাই।
তবে ঘরের মাঠে লাখের বেশি দর্শক থাকা ভারতকে নিস্তব্ধ করে শেষ হাসি হেসেছে অস্ট্রেলিয়াই। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো শিরোপা জিতল ক্যাঙ্গারুর দল। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের আসনটি আরেক ধাপ উপরে নিয়ে গেলেন কামিন্স-ওয়ার্নাররা।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৪০ রানে অল আউট হয় ভারত। জবাবে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় অস্ট্রেলিয়া। ষষ্ঠবার বিশ্বসেরার আসনে বসার সময় অজিদের হাতে ছিল আরো ৪২ বল।
ভারতের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার ৭, মিচেল মার্শ ১৫ ও স্টিভ স্মিথ ৪ রানে সাজঘরে ফেরেন। মাত্র ৪৭ রানে অজিদের ৩ উইকেট নিয়ে তখন বিশ্বজয়ের স্বপ্নে বিভোর ভারত।
তবে এমন অবস্থায় দলের হাল ধরেন ট্রেভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন। ধীরে ধীরে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে থাকেন দুই ব্যাটার। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন ট্রেভিস হেড। অন্যপ্রান্তে লাবুশেন তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন।
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে আউট হন হেড। এর মাধ্যমে ভাঙে লাবুশেনের সঙ্গে তার ১৯২ রানের জুটি। ১৩৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে আউট হন হেড। ম্যাক্সওয়েল এসে দলের জয় নিশ্চিত করেন। অন্যপ্রান্তে ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন লাবুশেন।
এর আগে দিনের শুরুতে মেগা ফাইনালে টস জিতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স যখন ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন অনেকেই চোখ কপালে তুলেছিলেন। ব্যাট হাতে ভারতের শুরুটাও খুব একটা খারাপ ছিল না।
তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নিতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৮০ রান সংগ্রহ করেছিল ভারত। অথচ বাকি অংশে দলটি সংগ্রহ করেছে মাত্র ১৬০ রান! যেখানে অজি বোলারদেরও ছিল বড় কৃতিত্ব।
ভারতের লড়াকু পুঁজির পেছনের কারিগর লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন রাহুল। অন্যপ্রান্তে ছন্দে থাকা কোহলি ফেরেন ৫৪ রানে। অধিনায়ক রোহিত শর্মার ৪৭ রানের ঝড়ো ইনিংসও ভারতকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটা।
বাকিদের ভেতর কেবল সুরিয়াকুমার যাদবই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেন। বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় অল্পেই থামে ভারত। অজিদের হয়ে স্টার্ক তিনটি, কামিন্স ও হ্যাজেলউড দুটি এবং ম্যাক্সওয়েল ও জাম্পা একটি করে উইকেট নেন।