চলতি শীতে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে হাসি ফুটেছে তালা উপজেলার চাষিদের মুখে। ফলন ভালো হওয়ায় প্রতিবছর তালা উপজেলায় বাড়তে শুরু করেছে আগাম শিম চাষির সংখ্যা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি শীত মৌসুমে তালা উপজেলার ৮৫-১০০ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ করেছেন সহস্রাধিক চাষিরা। প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ২৫ টন করে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টন শিম উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে শিমের ভালো দামও রয়েছে। তবে এর বাইরেও বেসরকারিভাবে বেশকিছু শিম চাষ করা হচ্ছে। শিম বাজারে উঠার প্রথম দিকে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়, এখন তা নেমেছে ৫০-৭০বা প্রকার ভেদে ৩০-৪০ টাকায়।
তালা উপজেলায় শীতকালীন মৌসুমের শিম চাষ করা হয়েছে অধিকাংশ অকৃষি জমিতে। কৃষকরা তাদের জমির পাশাপাশি জমির আইলে, খালের পাড়ে, বেড়িবাঁধের দুইপাশ ও সড়কের দুপাশসহ পতিত খালি জায়গায় শিমের চাষ করেছেন। তারা হাইব্রিড জাতের আইটেক, কেরেলা এসব শিম আগাম চাষ করায় ভালো দাম পাচ্ছেন। এতে অধিকাংশ জমিতে রঙ-বেরঙয়ের মন মাতানো ফুলে শোভিত হয়ে আছে শিম গাছ। চোখে পড়ে শিমগাছের দীর্ঘ সারি। সবুজ পাতার মধ্যে লকলক করছে শিমের শিষ। আর শিষে ধরে আছে বেগুনি ও হালকা সাদা ফুল। আর কিছু শিষে উঁকি দিচ্ছে তরতাজা শিম।
তাছাড়া এই উপজেলার উৎপাদিত শিম এলাকার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করছেন শিম ব্যবসায়ীরা। এতে তারাও আর্থিক লাভবান হচ্ছেন। কিছুদিন আগেও তালা উপজেলার বাড়ির আঙ্গিনায় সীমিত পরিসরে শিম চাষ করা হতো। এখন চাহিদা বেড়েছে, ফলনও বেড়েছে। ফলে কৃষি বিভাগের পরামর্শে অনাবাদি পতিত জমিকে আবাদী জমিতে রূপান্তরিত করে শিমের আবাদ করা হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিমচাষি ফয়সাল হোসেন বলেন, আগাম শিম চাষ করে বেশ ভালো দাম পাচ্ছি। প্রতি কেজি শিম ৬৫-৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি।
শিম ব্যবসায়ী নাজমুল সরদার বলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়ন, ইসলামকাঠি ইউনিয়নসহ আশেপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মণ শিম ক্রয় করে ঢাকার সাভার ও কাওরান বাজারে বিক্রয় করে থাকি। তাতে আমার ভালোই লাভ হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজিরা খাতুন জানান, আমরা মাঠপর্যায়ে আগাম বিভিন্ন সবজি চাষে কৃষকদের সহায়তা করে যাচ্ছি। ঘেরের আইল এবং রাস্তার ধারে এগুলোর ফলনও ভালো হয়। বিশেষ করে তালা উপজেলার এ বছর বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড শিমের আগাম চাষ হয়েছে, যা থেকে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।