জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ছাত্র হত্যার ঘটনায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, ফেনী জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ফেনী পৌরসভার সাবেক কমিশনার শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার নামে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি লালবাগ থানায় ১২ জানুয়ারি নথিভুক্ত হয়েছে। মামলার ২১ নম্বর আসামি ফেনীর এক সময়ের ত্রাস শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া।
এদিকে, চিহ্নিত সন্ত্রাসী শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়াকে আইনের আওতায় আনতে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া ফেনীতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তিনি ছিলেন ফেনীর গডফাদার হিসেবে খ্যাত জয়নাল আবেদীন হাজারীর ডান হাত। জয়নাল হাজারীর নির্দেশে তিনি ফেনীতে খুন, গুম ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করতেন শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া ফেনীতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তিনি ছিলেন ফেনীর গডফাদার হিসেবে খ্যাত জয়নাল আবেদীন হাজারীর ডান হাত। জয়নাল হাজারীর নির্দেশে তিনি ফেনীতে খুন, গুম ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করতেন শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া।
১৯৯৭ সালে ২৯ মার্চ ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে বের হওয়া মিছিলে তৎকালীন এমপি জয়নাল হাজারির ক্যাডার বাহিনী কর্তৃক ব্রাশফায়ারে খুন হন নাসির। এই খুনের অন্যতম হোতা শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফেনীতে শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। ফেনীর চাঁদাবাজদের গডফাদার ছিলেন শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া।
ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের শেল্টারে ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে জুলাই ও আগস্টে ফেনীতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চলে। কিন্তু অদৃশ্য ইশারায় এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন ফেনীর ত্রাস যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এম শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া। ফেনীর সবচেয়ে নাম করা সন্ত্রাসী কেন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া এ সময় ফেনী পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। তিনি কমিশনার থাকা অবস্থায় জয়নাল হাজারীর শেল্টারে এ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তাকে চাঁদা না দিয়ে কেউ বাড়ি করতে পারতেন না। ফেনী পৌরসভায় শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার কথাই ছিল আইন। শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার টর্চার থেকে বাঁচতে বিএনপির অনেক নেতা তখন ফেনী ছাড়তে বাধ্য হন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। ফেনীতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে এমন কোনো অপরাধ ঘটেনি, যেখানে শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া জড়িত নেই। সরকার পতনের পর ফেনীর আওয়ামী লীগের সব নেতা পালিয়ে গেলেও এখন ফেনীতে প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন যুবলীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া। তার বিরুদ্ধে প্রচুর পরিমাণে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
কথিত আছে, ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের অঢেল সম্পদ শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার জিম্মায় রয়েছে। অবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।