আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে দেশটি নিজেদের সেনা মোতায়েনের জন্য ‘প্রস্তুত এবং ইচ্ছুক’ বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়ার আগে স্টারমার বলেন, যুক্তরাজ্য ‘প্রয়োজনে নিজস্ব সেনা মোতায়েন করে’ ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ব্রিটেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হলে তিনি ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত বলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন। রোববার ডেইলি টেলিগ্রাফে স্টারমার লিখেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাজ্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, যার অর্থ— “প্রয়োজনে আমাদের নিজস্ব সৈন্যদের মোতায়েন করে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবদান রাখতে প্রস্তুত হওয়া এবং আমরা সেটা করতে ইচ্ছুক।”
স্টারমার আরও বলেন, আমি এটা হালকাভাবে বলছি না। তার মতে, তিনি “(সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে) খুব গভীরভাবে দায়বদ্ধতা অনুভব করেছেন যদিও এই ধরনের সিদ্ধান্ত সম্ভাব্যভাবে ব্রিটিশ সেনাদের ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। কিন্তু ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করার যেকোনও ভূমিকা আমাদের মহাদেশের নিরাপত্তা এবং এই দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।”
স্টারমার নিশ্চিত করেছেন, তিনি ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রচেষ্টার বিষয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ মোকাবিলায় সোমবার প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন। তিনি আরও বলেন, তিনি “আগামী দিনগুলোতে” মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের একসাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাজ্য “এক অনন্য ভূমিকা” পালন করবে।
ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মার্কিন সমর্থন থাকাটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টিও অপরিহার্য, কারণ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই (প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিনকে আবার আক্রমণ করা থেকে বিরত রাখতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া— চারটি প্রদেশের আংশিক দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী।
২০ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন সহায়তা কোথায় গেল, জানেন না জেলেনস্কি
এই চার প্রদেশের রাশিয়ার দখলে যাওয়া অংশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ। অবশ্য যুদ্ধরত এই দুই দেশের কেউই তাদের নিজস্ব ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য প্রকাশ না করলেও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হতাহতের সংখ্যা কয়েক লাখ বলে অনুমান করছে।