দেশব্যাপী ‘ছেলে ধরা’ গুজবের মধ্যেই পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে নতুন এক গুজবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শত শত অভিভাবক। গতকাল সোমবার (২২ জুলাই) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এসব গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
‘বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে’ এবং ‘বিদ্যালয়ে রক্তাক্ত কাটা হাত’ পাওয়া গেছে এমন গুজবে আতঙ্কিত হয়ে শত শত অভিভাবক ভিড় জমায় বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ে কয়েক’শ অভিভাবক জড়ো হওয়ার ঘটনায় হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। খবর শুনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষকরা অভিভাবকদের বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করার পর অভিভাবকরা বিদ্যালয় ছেড়ে যায়।
বিদ্যালয়ে অবস্থানরত কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘হঠাৎ করেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ল বিদ্যালয়ে কারা এসে সন্তানদের রক্ত চাইছে এমন কথা শোনার পর বিদ্যালয়ে ছুটে আসি। বিদ্যালয়ে এসে দেখি সবকিছু ঠিক আছে। শিক্ষকরাও জানাচ্ছেন, বিদ্যালয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। তবুও ভয় কাজ করছিল।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক বলেন, “সোমবার সকালে অভিভাবকদের মধ্যে ‘রক্ত নেওয়ার’ গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এসময় আতঙ্কিত অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ভিড় জমান। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও শিক্ষকরা অভিভাবকদের বিষয়টি গুজব বলে বুঝিয়ে শান্ত করে। অনেক অভিভাবক আমাকে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিতে বলেন কিংবা শিক্ষার্থীকে বাসায় নিয়ে যাবেন বললেও আমি তাদের ছুটি দিইনি। কারণ ছুটি দিলে ঘটনাটা আরও বেশি চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো। এতে সামনের দিনগুলিতে শিক্ষার্থী আসা বিদ্যালয়ে কমে যেতো।”
এদিকে অভিভাবকদের আতঙ্ক দূর করার জন্য বিকেলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, চারদিকে রক্ত সংগ্রহ কিংবা ছেলেধরা বিষয়টি গুজব। আমরা এই বিষয়ে সাধারণ জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সব বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক বার্তা দিতে বলেছি। গুজব অপপ্রচারকারীর সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।