অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: মানবপাচার পরিবীক্ষণ ও প্রতিরোধ বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামব্যাসেডর-অ্যাট-লার্জ জন কটন রিচমন্ড গত ৩ থেকে ৬ আগস্ট বাংলাদেশ সফর করেন। মানবপাচার প্রতিরোধের উপায় ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মানবপাচার (টিআইপি) প্রতিবেদনে উল্লিখিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে পরিমাপযোগ্য অগ্রগতি সাধনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা ও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করতে তিনি এ সফর করেন।
বৃহস্পতিবার মার্কিন দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকগুলোয় অ্যামব্যাসেডর-অ্যাট-লার্জ রিচমন্ডের সঙ্গে যোগ দেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।
মানবপাচার রোধে ২০১৮-২০২২ সালের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার ও দূত রিচমন্ড। তারা মানবপাচার রোধে বিচার, সুরক্ষা এবং প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বিদেশে পাঠানোর আইনসিদ্ধ মাশুল জোগাড়ে ঋণের ফাঁদে ফেলে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর পাচারকারীদের জবরদস্তির বিষয়েও আলোচনা করেন। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ জবরদস্তিমূলক শ্রম এবং যৌনব্যবসার উদ্দেশ্যে পাচার শনাক্ত করা এবং পাচারকারীদের জবাবদিহিতা বাড়ানো এবং আক্রান্তদের সহযোগিতামূলক সেবা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
কক্সবাজারে দূত মিলার ও রিচমন্ড শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনারের সঙ্গে বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাচারের ঝুঁকি এবং এই ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় কী হতে পারে– এসব পর্যালোচনা করেন। তারা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন এবং শরাণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশনারের প্রতিরোধ দলের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবপাচার ঝুঁকি সীমিত করতে সরকারের করণীয় পদক্ষেপ এবং আরো বিশদভাবে মানবপাচারের ঘটনা প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিনিধি দলটি ইউএসএআইডির অর্থায়নে ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন টিআইপি শেল্টারে মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ওই আশ্রয়কেন্দ্রটি পাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের যেসব অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা দেয় সেগুলোর বিষয়ে অবহিত হন।
তারা শিক্ষার্থীদের একটি দলের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন, সেখানে মানবপাচারের ঘটনার কার্যকর বিচার প্রক্রিয়ার গুরুত্ব; অভ্যন্তরীণ বা দেশের বাইরে, যেখানেই হোক, চোরাচালান ও মানবপাচারের মধ্যে তফাৎ এবং বার্ষিক টিআইপি প্রতিবেদন এবং টায়ার টু ওয়াচ লিস্ট তালিকায় বাংলাদেশের পরপর তৃতীয়বারের অন্তর্ভুক্তির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন।
সফরের পুরো সময় জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দূত মিলার ও রিচমন্ড আন্তর্জাতিক অংশীদার ও বিভিন্ন মিশনের প্রধানসহ কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারা মানবপাচার প্রতিরোধের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।