নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: দেশের অর্থনীতির সার্বিক বিষয় দেখভালের জন্য একটি ‘ফিন্যানশিয়াল স্ট্যাবিলিটি কাউন্সিল’ গঠনের পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আইএমএফ)। সংস্থাটির ফিন্যানশিয়াল সেক্টর স্ট্যাবিলিটি রিভিউ (এফসিসিআর) মিশন গতকাল বাংলাদেশে তাদের ১২ দিনের সফর শুরু করেছে। দেশের আর্থিক খাতের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা এবং সর্বশেষ অবস্থা জানতেই এসেছে আইএমএফের এফসিসিআর মিশনটি।
আইএমএফের মতে, ব্যাংক কমিশনের পাশাপাশি ‘ফিন্যানশিয়াল স্ট্যাবিলিটি কাউন্সিল’ গঠন করলে অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি, চড়াই-উতরাই এবং নানা সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে এবং তা সমাধানে কাজ করা যাবে। এ ছাড়া নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নে সরকারের ক্ষমতা, সরকারের বেতন কাঠামো থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেতন কাঠামো পৃথককরণ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিভিন্ন অনুশাসন বা আদেশের ক্ষমতা সংশোধনসহ একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে আইএমএফ। আইএমএফ প্রতিনিধিদলটি তাদের সফর শুরুর প্রথম দিনেই গতকাল ‘ফিন্যানশিয়াল স্ট্যাবিলিটি কাউন্সিল’ গঠন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
আইএমএফের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার আর্থিক খাত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুপারিশ ও প্রশ্ন পাঠানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এবারের মিশনটির বিশেষ দৃষ্টি থাকবে সরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতার বিষয়টি। আইএমএফের সুপারিশে বলা হয়েছে, সরকারি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সর্বময় ক্ষমতা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক কম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৬ ধারা সংশোধন করতে হবে।
আইএমএফের এসব সুপারিশের ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আইএমএফের সুপারিশগুলো ঠিক আছে। তবে শুধু আইন সংশোধন করলেই হবে না, বাস্তবায়ন করতে হবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বেসরকারি ব্যাংকগুলো আছে। সেগুলোর বেশির ভাগই খেলাপি ঋণে জর্জরিত। এগুলো ভালো নেই। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তৃত্ব বাড়ালেই যে সরকারি ব্যাংকের সব পরিবর্তন হয়ে যাবে এমন ভাবার কারণ নেই। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো উচিত। আর আইএমএফ যে কাউন্সিল গঠনের কথা বলেছে তাতে কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না।’